পথ অবরোধ, বিক্ষোভ–আন্দোলন, মামলা–বৈঠক সব করা হয়ে গিয়েছে। তারপরও চাকরিহারা শিক্ষকদের মনবাঞ্ছা পূর্ণ হচ্ছে না। তাই আন্দোলন চলছে দীর্ঘ সময় ধরে। চাকরিহারা শিক্ষক–শিক্ষিকারা বিকাশ ভবনের সামনে বসে অবস্থান–বিক্ষোভ করছেন এবং তা দেখছে সকলে। বিকাশ ভবনের সামনে থেকে এখন উঠে যেতে হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের অনড় মনোভাব সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরিপন্থী। আর এই আবহে এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান চাকরিহারারা। আলোচনা চান শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও।
গতকাল রাজ্যের শিক্ষা সচিবের সঙ্গেও বৈঠক করেন চাকরিহারারা। কিন্তু তাতে তাঁদের সন্তুষ্টি মেলেনি। তাই আন্দোলন তাঁরা রাজধানীর বুকে নিয়ে যেতে চায়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, পরীক্ষা দিতে হবে। আর চাকরিহারাদের মধ্যে একাংশ পরীক্ষা দিতে চান না। এটা সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশকে অবমাননা করা। ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে যোগ্য এবং অযোগ্য শিক্ষক পৃথক করতে প্রমাণ দিতে পারেনি স্কুল সার্ভিস কমিশন। সিবিআইকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সেটাও সঠিক নয় বলে অভিযোগ। তাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নতুন করে নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়ার কথা। তাতেই আপত্তি চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশের। বাড়ছে জটিলতা।
আরও পড়ুন: জেলবন্দি জঙ্গিদের সঙ্গে কারা দেখা করছে? ভিজিটার্স বুক পরীক্ষার নির্দেশ লালবাজারের
ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে যাঁরা যোগ্য শিক্ষক তাঁরা স্কুলে গিয়ে পড়াতে পারবেন। তারপর একটি তালিকা বের হয়। সেই তালিকা অনুযায়ী স্কুলে যেতে শুরু করেন শিক্ষক–শিক্ষিকারা। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সেসব চলবে। আর একটা অংশ পড়ে অযোগ্যের তালিকায়। যাঁদের পরীক্ষা দিতে হবে। কিন্তু তাঁরা পরীক্ষা দিতে রাজি নন। রাজ্য সরকার সকলের চাকরি বাঁচাতে রিভিউ পিটিশন করে। এখন গরমের ছুটি। তাই সরকারি স্কুলগুলি বন্ধ। খুললে আর এক দফা সমস্যা শুরু হবে। তার আগে মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে রাস্তা বের করতে চাইছেন তাঁরা। কিন্তু তাঁরা কেউ আদালতের উপরে নন।
এত সবকিছুর পরও ২১ দিন ধরে টানা পথে বসে আন্দোলন করে চলেছেন চাকরিহারা শিক্ষক–শিক্ষিকারা। গতকাল বিকাশ ভবনে শিক্ষা সচিবের সঙ্গে বৈঠক করলেও নানা বিষয় নিয়ে জটিলতা কাটেনি। চাকরিহারা শিক্ষকদের হুঙ্কারও শোনা গিয়েছে। তাঁরা জানতে চান, চাকরিহারা শিক্ষকদেরকে নিয়ে রাজ্য সরকার কী ভাবছেন? আইনি পথে যাওয়া নিয়ে সরকার কতটা সক্রিয়? এই সব বিষয়ে খোলাখুলি আলোচনা চান তাঁরা। তাই মুখ্যমন্ত্রী–শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে চান। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ৩১ মে তারিখের মধ্যে পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। সুতরাং তার আগেই বৈঠক চাইছেন চাকরিহারা শিক্ষকরা।