কোটি কোটি টাকা লুটের ঘটনায় গ্রেফতার কলকাতা পুলিশের এসটিএফের কনস্টেবল! তাঁকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশেরই গোয়েন্দা বিভাগ! সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে, ধৃত ওই কনস্টেবলের নাম মিন্টু। তিনি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জয়পুর থানা এলাকার বাসিন্দা।
ঘটনা প্রসঙ্গ জানা গিয়েছে, গত ৫ মে (২০২৫) কলকাতার এন্টালি থানা এলাকায় একটি ট্যাক্সি থেকে ভয়াবহ লুটের ঘটনা ঘটে। লুট করা হয় নগদ ২ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা! সেই ঘটনার তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে একে একে মোট ছ'জনকে গ্রেফতার করা হয়। সেই ছ'জনকে জেরা করে যে সপ্তম ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া যায়, তিনিই হলেন এই মিন্টু। গতকাল (মঙ্গলবার - ১৩ মে, ২০২৫) রাতে তাঁকে পাকড়াও করা হয়।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, কলকাতার এসএন ব্যানার্জি রোডে একটি বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় সংস্থার অফিস রয়েছে। গত ৫ মে বেলা পৌনে বারোটা নাগাদ সেই সংস্থার দু'জন কর্মী টাকা ভর্তি ব্যাগ নিয়ে একটি ট্যাক্সিতে ওঠেন। ব্যাঙ্কে টাকা জমা দিতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু, ট্যাক্সি যখন ফিলিপস মোড়ের কাছে পৌঁছয়, সেই সময় দুই অচেনা ব্যক্তি আটমকাই তাঁদের ট্যাক্সিতে উঠে পড়েন। এরপর একটি নির্জন জায়গায় ট্যাক্সিটি নিয়ে যান তাঁরা। তারপর সেখানেই টাকা ভর্তি ব্যাগ কেড়ে নিয়ে নেমে পড়েন এবং সেখান থেকে চম্পট দেন।
এরপর এন্টালি থানায় লুটের অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশকে সমস্ত ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জানান মুদ্রা বিনিময় সংস্থার ওই দুই কর্মী। ঘটনার তদন্তে নেমে এন্টালি, সুভাষগ্রাম, মথুরাপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে একে একে ছ'জনকে গ্রেফতার করেন পুলিশের গোয়েন্দারা। ধৃতরা হলেন - সঞ্জীব দাস ওরফে পচা, মহম্মদ সরফরাজ ওরফে সোনু, ঋজু হাজরা, শাহরুখ শেখ, আলমগির খান এবং আমিরউদ্দিন ওরফে গুজ্জর। এঁদের মধ্যে ঋজু সংশ্লিষ্ট সংস্থারই কর্মী ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
এরপর এই ছয় অভিযুক্তকে জেরা করেই মিন্টুর খোঁজ পাওয়া যায়। তাঁকে দীর্ঘক্ষণ জেরার পরই গ্রেফতার করা হয়। কলকাতা পুলিশের এই কনস্টেবল স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফের সদস্য! তবে, এই লুটে তাঁর ভূমিকা ঠিক কী ছিল, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তিনি কোনও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপাচার করেছিলেন, নাকি নিজেই লুটের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, এই ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই খোয়া যাওয়া অর্থের মধ্যে ৭১ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকি টাকাও যাতে উদ্ধার করা যায়, পুলিশের তরফে সেই চেষ্টা চলছে।