সম্প্রতি বেলগাছিয়া ভাগাড়ে বড়সড় বিপর্যয় দেখা গিয়েছে। এই অবস্থায় ধাপা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে কলকাতা পুরসভার। এখানে আবর্জনার স্তূপ সরাতে কয়েক বছর আগেই ধাপায় শুরু হয়েছিল বায়োমাইনিং পদ্ধতি। তবে গত ফেব্রুয়ারি থেকে সেই কাজ থমকে রয়েছে। কারণ এই কাজের জন্য বরাতপ্রাপ্ত সংস্থা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বায়োমাইনিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেনি। ফলে সংস্থাটির চুক্তি বাতিল করেছে পুরসভা। তারপরেই বায়োমাইনিং প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে ধাপায়। পুনরায় সেখানে বায়োমাইনিংয়ের কাজ শুরু করতে তৎপর হয়েছে পুরসভা। দ্রুত এনিয়ে দরপত্র ডাকা হবে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। এছাড়াও, ধাপায় প্রচুর বর্জ্য জমে থাকার ফলে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়। তা থেকে প্রায়ই আগুন লেগে থাকে। সেই আগুন নেভানোর জন্য নিয়মিত স্প্রিঙ্কলারের মাধ্যমে জল ছিটানো হয়। পাশাপাশি দমকলেরও সাহায্য নেওয়া হয় বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ধাপার উপর চাপ বাড়ছে, যে কোনও সময় ধস নামতে পারে, নবান্নে চিঠি কলকাতা পুরসভার
তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে একটি প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন, বায়োমাইনিংয়ের দায়িত্ব আগে যে সংস্থাটিকে দেওয়া হয়েছিল সেই সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার জানিয়েছেন, ধাপায় বায়োমাইনিংয়ের কাজ পুনরায় শুরু করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ২০২০ সালে বায়োমাইনিংয়ের দায়িত্ব পাওয়া আগের সংস্থাকে কাজ শেষ করার জন্য তিন বছর সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে, সেই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় আরও দু’বছর সময় দেওয়া হয়েছিল সংস্থাটিকে। তা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত ৪০ লক্ষ টনের মধ্যে মাত্র ১৫ লক্ষ টন বর্জ্য বায়োমাইনিংয়ের কাজ করতে পেরেছে সংস্থাটি। সেই কারণে ওই সংস্থার যুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
বর্তমানে ধাপা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে প্রতিদিন ৫,০০০ টন বর্জ্য জমা হয়, যার মধ্যে ৫০০ টন সল্টলেক, নিউ টাউন এবং পানিহাটি থেকে আসে। উল্লেখ্য, বায়োমাইনিং হল এমন একটি প্রক্রিয়া যাতে অণুজীব ব্যবহার করে বর্জ্য থেকে ধাতু আলাদা করা হয়। বর্জ্যের একটি বড় অংশ সার, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং বিভিন্ন ধরণের প্লাস্টিকের আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহৃত করা হয়।
ইতিমধ্যে পুরসভার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য মূল্যবান পণ্য উৎপাদনের জন্য বর্জ্য ব্যবহার করতে বেশ কয়েকটি প্ল্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনাও করেছে। পুরসভার একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, বায়োমাইনিংয়ের কাজ হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি বড় ধাক্কা। বিশেষ করে ধাপায় একটি আধুনিক স্যানিটারি ল্যান্ডফিল সাইট নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। তার জন্য কেন্দ্রীয় অনুদানের প্রয়োজন। সেই আবহে এটি বড় ধাক্কা।