এবার নয়া ভবন পেতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। ধর্মতলায় এসএন ব্যানার্জি রোডে আছে কলকাতা পুরসভার ভবন। তবে সেটি হেরিটেজ ভবন। ব্রিটিশ আমলে তৈরি হয়েছিল। এই ভবনের বয়স প্রায় ১৫০ বছর বলে জানা গিয়েছে। তবে স্বাধীনতার পর এই প্রথম কলকাতা পুরসভার ওই ভবনের পাশেই নিজস্ব আর একটি ভবন পাচ্ছে পুরসভা। আজ, শুক্রবার সেই ভবনের উদ্বোধন করবেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এই নতুন ভবন যেখানে গড়ে উঠেছে একদা সেটাই ভারতের প্রথম সিনেমা হল ‘চ্যাপলিন’। ওই সিনেমা হলের জমিতেই গড়ে উঠেছে কলকাতা পুরসভার নয়া পাঁচতলা ভবন। নাম রাখা হয়েছে ‘চ্যাপলিন ভবন’। ‘চ্যাপলিন ভবনের’ বাইরের কাজ সম্পূর্ণ। তবে ভিতরের কাজ বাকি আছে।
ওই বাকি কাজ হয়ে গেলেই এখানে অনেকে বসতে পারবেন। এই নতুন ভবনের উপরে রয়েছে সবুজ রংয়ের গম্বুজ। এই ভবনটির বেসমেন্ট–সহ গোটা বাড়িটি ৬ তলা। ২৫ হাজার বর্গফুটের মতো অফিস করার মতো জায়গা রয়েছে। গোটা ভবনটি পুরোপুরি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। একেবারে টপ ফ্লোরে থাকবে দু’শো আসন বিশিষ্ট একটি কনফারেন্স রুম। আর বেসমেন্টে একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ গাড়ি রাখা যাবে। এই নতুন ভবনে ছিল ঐতিহাসিক সিনেমা হল। একদা এখানেই ছিল দেশের প্রথম ‘বায়োস্কোপ’। প্রথম নাম ছিল ‘এনফিনস্টোন পিকচার প্যালেস’।
আরও পড়ুন: দমদমের বদলে নোয়াপাড়া স্টেশনে যাত্রা শেষ করবে বেশিরভাগ মেট্রো, আসছে বড় পরিবর্তন
এখানের একটা ইতিহাস আছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ফার্মজি জামশেদজি ম্যাডান কলকাতা পুরসভা থেকে জমি লিজ নেন ১৯০৭ সালে। তারপর সেখানে তৈরি করেন দেশের প্রথম সিনেমা হল। ১৯৩০ সালে যার নাম ছিল ‘স্ট্যান্ড সিনেমা’, ১৯৫১ সালে নাম বদলে হয় ‘মিনার্ভা’। আর ১৯৮৯ সালে চার্লি চ্যাপলিনের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই প্রেক্ষাগৃহের নাম হয় ‘চ্যাপলিন’। সেই নামেই মহানগরীর সকলে চেনে। যদিও ১৯৯৫ সালে চ্যাপলিন সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৩ সালে বামফ্রন্টের পুরবোর্ড ওই জমি নিয়ে নয়া পুরভবন করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সেটা বাস্তবে হয়নি। সেটাই এবার বাস্তবায়িত করছে তৃণমূল কংগ্রেস পুরবোর্ড।
কলকাতা পুরসভার পুরনো ভবনে এখন অফিস বেড়েছে। লোক বেড়েছে সমানতালে। তাই কলকাতা পুরসভার নিজস্ব একটি ভবনের প্রয়োজনীয়তা হয়। ২০১৬ সালে এই নতুন ভবনের শিলান্যাস হয়েছিল। আর কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। এখানে একটি ফলক বসবে। যেখানে লেখা থাকবে চ্যাপলিন সিনেমা হলের ইতিহাস। ১৮৭৬ সালে কলকাতা পুরসভার এসএন ব্যানার্জি রোডের ভবন তৈরি হয়েছিল। তাই সেখানে দীর্ঘদিন অফিস চলার পর এখন রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন। সেই কাজ করতে গেলে পুরসভার কাজ থমকে যাবে। তাই এই নতুন ভবনে সরে গিয়ে ওই ভবনটির সংস্কার করা হবে বলে সূত্রের খবর।