পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের হত্যাকাণ্ড নিয়ে এখন দু’দেশের মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই চলছে। একে অপরকে স্নায়ুর চাপ দিতে শুরু করেছে। ২৬ জন পর্যটকের এমন নির্মমভাবে হত্যায় কেঁপে উঠেছে গোটা দেশ। তার মধ্যে তিনজন বাংলার পর্যটক ছিলেন। আর একজন বিদেশি পর্যটক ছিলেন বলে কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি। পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিরা এই কাজ করেছে। আজ আবার কাশ্মীরের বান্দিপোরায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের গুলির লড়াই হয়। সেখানে মোস্ট ওয়ান্টেড লস্কর কমান্ডার নিকেশ হয়েছে। এই আবহে পহেলগাঁও নিয়ে বড় দাবি করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। আর একটা ভবিষ্যদ্বাণীও করলেন।
আজ, শুক্রবার সকালে নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে এসে প্রাক্তন সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানেই পহেলগাঁও নিয়ে জঙ্গিদের কাজের ব্যাখ্যা দিলেন। আর কেন্দ্রীয় সরকার বড় কোনও পদক্ষেপ এবার আবার করবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করলেন। দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘প্রায় ৬ বছর হতে চলল ৩৭০ প্রত্যাহার হয়েছে। আমি তার মধ্যে নিজে দু’বার ঘুরে এসেছি। একবার লে লাদাখ গিয়েছি। তারপর অমরনাথ গিয়েছি। আমি নিজে দেখেছি কি বিপুল মানুষের ঢল। কোনও সমস্যা নেই। যারা খুব আগ্রহ দেখিয়েছিল নির্বাচন নিয়ে সেখানে কেন্দ্র নির্বাচনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এখন সেখানে গুলি চলছে কেন? তার জবাব নির্বাচিত সরকারকে দিতে হবে। এই নির্বাচিত সরকারের আমলে এত বড় বিপর্যয় হল কেন? কেন গোটা দেশ গোটা বিশ্ব কেঁপে গিয়েছে?’
আরও পড়ুন: দ্রুত জেলা সংগঠনে রদবদল করবে তৃণমূল কংগ্রেস, এবার ‘মেন্টর’ ফেরাচ্ছেন নেত্রী
ওমর আবদুল্লার সরকারের উপর দোষ দিলীপ ঘোষ চাপালেও পহেলগাঁও–সহ গোটা কাশ্মীর সেনাবাহিনীর অধীনে বলেই স্থানীয় মানুষজন থেকে পর্যটকরা জানেন। সেখানে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল আর কাউকে দেখা গেল না কেন? এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে। এই পর্যটকদের হত্যাকাণ্ড নিয়ে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘কেন্দ্রীয় সরকার সঙ্গে সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়েছে। তোমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারোনি। প্রতি বছর প্রায় দেড় কোটি পর্যটক কেন্দ্রীয় সরকারের আশ্বাসে যাচ্ছিল। স্থানীয় মানুষ এখন হাহাকার করছে। বলছে আমরা ছাড়ব না। হোটেল খালি হয়ে গিয়েছে। এবার স্থানীয় মানুষ খাবে কি? ওরা ৪০ বছর সন্ত্রাসবাদ দেখেছে। সেই সময় এখন ওরা কাটিয়ে উঠেছে। তবে আমার মনে হয় এই আতঙ্ক বেশিদিন থাকবে না। কারণ সাপের মাথা মোদী থেঁতলে দিয়েছেন। মাঝে মাঝে শুধু লেজটা নড়ে উঠছে।’
তাছাড়া গতকাল নয়াদিল্লিতে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে বিরোধী দলগুলি সমর্থন করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। যে পদক্ষেপ করবে তাতে তাদের সায় আছে। কিন্তু পদক্ষেপ করতেই হবে। কল্পনার বাইরে শাস্তি পাবে বলে দাবি করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন এমন করল জঙ্গিরা? দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘লোকের হাতে কাজ আছে। সবার হাতে পয়সা আছে। সবাই ভাল আছে। এটা সন্ত্রাসবাদীরা মেনে নিতে পারছিল না। কেউ হাতে বন্দুক তুলে নিতে রাজি হচ্ছিল না। তাই এভাবে পর্যটকদের ভয় দেখিয়ে তাদের আসা বন্ধ করে আবার হাতে বন্দুক তুলে দেওয়ার চেষ্টা। দেশ বিরোধী কাজ করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা। ওখানে কয়েকজন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা এভাবে খুব সুবিধা করতে পারবে না। গোটা দেশ সঙ্গে আছে। ওখানে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছে। সরকার আগে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছিল। আমার মনে হয় সরকার আবার সেরকমই কিছু করবে। মোদীর ওপর ভরসা রাখা উচিত।’