২০২৬ সালে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন হবে। আর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতি জেলায় সংগঠনে রদবদল করা হবে বলে সূত্রের খবর। সেটা এবার দ্রুত হবে বলে জানা গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে। এই রদবদলের প্রাক্কালে জেলা পরিষদে ‘মেন্টর’ ব্যবস্থা ফেরাতে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ‘মেন্টর’ পদ সরকারিভাবে স্বীকৃত। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর এই ‘মেন্টর’ নিয়োগ করে ছিল। পরে তা আবার সরিয়েও দেওয়া হয়। এবার আবার তা শুরু হচ্ছে। রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর জেলা পরিষদগুলিতে ‘মেন্টর’ নিয়োগ করতে চলেছে।
এদিকে এই ‘মেন্টর’ পদে যিনি থাকেন তিনি সকলকে নিয়ে চলার চেষ্টা করেন। একটা সমন্বয় করে সাফল্য তুলে দেন। এঁরা জেলা পরিষদের দফতরে অফিস এবং একটি গাড়ি পান। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে জেলা সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে চলেন তাঁরা। আর বেশ কিছু পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যাতে জনসংযোগ এবং মানুষের পরিষেবার কাজে সফল হওয়া যায়। নানা কারণে এখনও সংগঠনে রদবদল করা সম্ভব হয়নি। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বারবার প্রকাশ্যে বদলের কথা বললেও এখনও তা ঘটেনি। সেখানে ‘মেন্টর’ নিয়োগ করার বিজ্ঞপ্তি নানা জেলায় পৌঁছে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: বহরমপুরকে সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলতে উদ্যোগ পাঠানের, সাংসদ তহবিলের টাকা ব্যবহার
অন্যদিকে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি এবং সহ–সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার গোটা বিষয়টি সম্পর্কে জানতেন না। গোটা বিষয়টাই করছেন তৃণমূলনেত্রী বলে সূত্রের খবর। এখন অবশ্য জানতে পেরেছেন। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অবশ্য গোটাটাই জানেন। তাই তিনি এখন চুপ করে আছেন। রদবদল নিয়ে একটা তালিকা তৈরি হয়েছে। সেই তালিকা বেশ কিছুদিন আগে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেন সুব্রত বক্সি। তারপর এই ‘মেন্টর’ নিয়োগ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তাহলে কি ‘মেন্টর’ নিয়োগ হয়ে গেলে রদবদল হবে? উঠছে প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান–সহ বেশ কয়েকটি জেলায় বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর নিয়োগও হয়েছে।
হাওড়ায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেন্টর করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে মেন্টরের দায়িত্ব পেয়েছেন অখিল গিরি। বাঁকুড়ায় অখিল খাঁকে আনা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে মেন্টর করা হয়েছে দীনেন রায়কে। ঝাড়গ্রামে মেন্টর করা হয়েছে স্বপন পাত্রকে। আর অন্যান্য জেলাতেও মেন্টর নিয়োগ করা হবে। তার পরে ১৭টি জেলায় জেলা সভাপতি পদে বদল হতে পারে বলে সূত্রের খবর। এই রদবদলের তালিকা তৈরি করেছেন সুব্রত বক্সি এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেটা বাস্তবায়িত হয়নি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেতার কথায়, ‘বিধানসভা নির্বাচনের আগে পঞ্চায়েত স্তরের কাজে গতি আনতেই এই মেন্টর নিয়োগ করা হয়। যাঁরা সমন্বয় বজায় রেখে মানুষের দুয়ারে পরিষেবা পৌঁছে দেবেন।’