তিনি সাংসদ হয়েছেন। নয়াদিল্লিতে তাই বেশি থাকতে হয়। কিন্তু জেলাকে তিনি একদম ভোলেননি। তাঁকে নিয়ে সম্প্রতি বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। কারণ চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়েছিলেন। প্রকৃতির কোলে নিজেকে মেলে ধরে সেই ছবি পোস্ট করেছিলেন। আর সেটা যখন করেছিলেন তখন মুর্শিদাবাদ জেলা তপ্ত হয়ে উঠেছিল। ওয়াকফ আইন বিরোধী আন্দোলন থেকে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল নবাবের জেলা। দলের অন্দরেই থাকা বিধায়ক–সাংসদ–নেতারা সমালোচনা করেন তাঁর। তিনি জবাব দেননি। এবার পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পর সক্রিয় হলেন তিনি। হ্যাঁ, তিনি বহরমপুরের সাংসদ ইউসুফ পাঠান।
মুর্শিদাবাদে এখন শান্তির পরিবেশ বিরাজ করছে। সেখানে কী ঘটেছিল সেটা জানেন বহরমপুরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ। কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। তা নিয়ে গোটা দেশ শিউরে উঠেছে। এমন ঘটনা যদি আবার ঘটে! বাংলায় যদি আবার নেমে আসে অশান্তির বাতাবরণ! এই কাজগুলি যাতে না হয় তাই আইনশৃঙ্খলা সঠিক রাখতে নিজের সাংসদ তহবিলের টাকায় গোটা বহরমপুরকে সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলতে চান তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ইউসুফ পাঠান। তাই তো বেলডাঙায় এসে একটি চায়ের দোকানে দলীয় কর্মী এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলোচনা করেন পাঠান। বহরমপুরের মাইনরিটি ভবনে ইমাম, মোয়াজ্জিন এবং পুরোহিত সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে সম্প্রীতি বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই এই কথা ঘোষণা করেন ক্রিকেটার–সাংসদ।
আরও পড়ুন: কলকাতা পুরসভার বকেয়া সম্পত্তি করের পরিমাণ কত? বিরাট টাকার অঙ্ক উদ্ধারে উদ্যোগ
সামশেরগঞ্জ এবং ধুলিয়ান যখন অগ্নিগর্ভ তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করেছিলেন ইউসুফ পাঠান। কখনও গাছের তলায় বসে আছেন, কখনও চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছেন এবং প্রকৃতিকে উপভোগ করছেন। এইরকম নানা ছবি দিয়ে দলের অন্দরেই সমালোচিত হন পাঠান। এমনকী এমন পরিস্থিতিতে বহরমপুরের সাংসদ কোথায়? প্রশ্ন তুলে দেন দলের অনেকেই। তবে তাঁরা সবাই জেলার সাংসদ–বিধায়ক ও নেতারা। সুতরাং উত্তর দেননি তিনি। এবার কাজ করে দেখালেন ইউসুফ। বুঝিয়ে দিলেন তিনি কথা কম কাজ বেশি নীতিতে বিশ্বাসী।
গতকাল বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের একটি চায়ের দোকানে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা– কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে বসে পড়েন সাংসদ ইউসুফ পাঠান। সেখানে স্থানীয় মানুষজন জড়ো হয়ে যান। তখন তাঁদেরকেও কাছে ডেকে নেন সাংসদ। আর আলোচনায় যোগ দিতে অনুরোধ করেন। সেখানেও গোটা বহরমপুরকে তিনি সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলতে চান বলে জানান। সকলেই সহমত পোষণ করেন। তখন বহরমপুরের সাংসদ ইউসুফ পাঠান বলেন, ‘এখানে সম্প্রীতি এবং আইনশৃঙ্খলা মেনে জীবনযাপন করতে হবে। যে সুনাম ছিল সেটা আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বলব, সবাই নিজের চোখ–কানকে বিশ্বাস করুন। আমার পক্ষ থেকে আরও কী করা যায় সেটা বলুন। আমি সাংসদ তহবিল থেকে বহরমপুরে সিসি ক্যামেরা লাগাতে চাই। যাতে আইনশৃঙ্খলা ভাল থাকে।’