পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের হত্যা করার ঘটনায় গোটা দেশ তেতে উঠেছে। নির্মমভাবে গুলি করে জঙ্গিরা হত্যা করেছে পর্যটকদের। আর তাতেই শান্ত শুভ্র ভূস্বর্গ রক্তাক্ত হয়ে যায়। হাহাকার নেমে আসে একের পর এক পরিবারে। এবার জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে বলে ভারত সরকার জানিয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ, বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার গেটে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা পোড়ালেন বিজেপি বিধায়করা। আর এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কড়া ভাষায় বিজেপিকে তোপ দাগলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
এই হত্যাকাণ্ডে বাংলার তিনজন নাগরিক মারা যান। যা নিয়ে এখন জোর চর্চা জারি রয়েছে সর্বত্র। এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের পাল্টা জবাব না দিলে শান্তি নেই। এমনটাই মনে করছেন অনেকে। এই আবহে ভারত সরকারের ব্যর্থতা উঠে আসছে। আর এখন পাকিস্তান নতুন করে হুমকি দিতে শুরু করেছে। জল বন্ধ হলে সেটাকে যুদ্ধ হিসাবে দেখা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে শাহবাজ শরিফের সরকার। সেখানে বিজেপি এখনও হিন্দু মুসলমান বলে মানুষের মধ্যে বিভেদ করছে বলে দাবি সিপিএমের। এই বিষয়ে মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘মানুষকে এককাট্টা করার বদলে এই পরিস্থিতিতে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি। মানুষে মানুষে ভাগ করছে ধর্মের ভিত্তিতে।’
আরও পড়ুন: ‘পুরো তার কেটে গেছে লোকটার!’ শুভেন্দুর পোস্ট করা নিয়ে চরম খোরাক করলেন দেবাংশু
কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে শুধু ধরে ধরে হিন্দুদের হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করল বিজেপি। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তোলপাড় গোটা দেশ। আজ বৃহস্পতিবার এই নিয়ে ভারত–পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করেছে। কারণ ভারত পাঁচটি পদক্ষেপ করলেও পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের বক্তব্য, ‘ধর্ম নিয়ে আগুন জ্বালালে ভোটের রুটি তাতে সেঁকতে পারবে বিজেপি। শুভেন্দু যখন তৃণমূলের নেতা তখন মাওবাদীদের নিয়ে এসে লাশের পাহাড় করেছিল ওরা। আজকে বিজেপির ঝান্ডা নিয়ে হিন্দু হিন্দু করছে। যখন এই ধরনের সংকট হয়, পাকিস্তান থেকে যখন সন্ত্রাসবাদী পাঠিয়ে অস্ত্র দিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আমাদের দেশের মানুষকে খুন করা হচ্ছে, নিরীহ মানুষকে খুন করা হচ্ছে, তখন যে কোনও দেশপ্রেমিকের কাজ হচ্ছে দেশের মানুষকে এককাট্টা করা।’
এছাড়া এই ঘটনা নিয়ে এখন ভারত সরকার কোন পথে হাঁটবে সেটাই দেখার। তবে যেভাবে পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গিরা ভারতে ঢুকে কাশ্মীরে পর্যটকদের গুলি করে খুন করল তা আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। এই কারণে মহম্মদ সেলিমের কথায়, ‘মুর্শিদাবাদের সুতি হোক বা ধুলিয়ান, যখন মানুষ মারা যান ধর্মীয় উস্কানিতে, মানুষ সাম্প্রদায়িক রাজনীতির শিকার হন। আজকে দাঁড়িয়ে ধর্মের সঙ্গে রাজনীতিকে যুক্ত করা এবং ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে ভাগ করা উচিত নয়। যারা এই ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে, সে যে ধর্ম নিয়েই করুক, তারা দোষী। এই কথা আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি। তাই ওরা সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে নয়, বামপন্থী এবং ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির বিরুদ্ধে। কারণ আমরা এই ধর্ম নিয়ে ব্যবসা বন্ধ করতে চাই।’