মহিলা চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের রাতের শিফটে নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয়েছিল চিকিৎসক সংগঠনগুলি। গত বছর আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্পের আওতায় হাসপাতালের সংবেদনশীল জায়গাগুলিতে বায়োমেট্রিক লক বসানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাজ্য। প্রায় এক বছর পর অবশেষে সেই কাজের অগ্রগতি কতদূর? এবার তা জানার উদ্যোগ নিল স্বাস্থ্য দফতর।
আরও পড়ুন: জলপাইগুড়িতে জাপানি এনকেফালাইটিসে মৃত্যু ৩ জনের, পরিদর্শনে স্বাস্থ্য দফতর
রাজ্যের বিশেষ সচিব (স্বাস্থ্য-শিক্ষা) অনিরুদ্ধ নিয়োগীর স্বাক্ষরিত এক আদেশনামায় সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও অধিকর্তার কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। কোন হাসপাতালে কতগুলি বায়োমেট্রিক অ্যাকসেস কন্ট্রোল সিস্টেম বসানো হয়েছে, কতগুলি এখনও বাকি আছে, কোনগুলি চালু আছে আর কোনগুলি অচল? এই সব বিস্তারিত তথ্য দ্রুত জমা দিতে বলা হয়েছে।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে গত বছর আন্দোলন তীব্র হলে ১৮ অগস্ট নবান্ন থেকে প্রকল্পটির ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্দেশ্য ছিল, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যেসব জায়গায় নাইট ডিউটি করেন, সেখানে বায়োমেট্রিক ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে না পারে। প্রশাসনিক অনুমোদনও মেলে অক্টোবর মাসেই। কিন্তু প্রায় ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও বাস্তবে কাজের গতি আশানুরূপ হয়নি। চিকিৎসকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স-এর প্রাক্তন সম্পাদক মানস গুমটা বলছেন, এই উদ্যোগ শুনতে ভালো লাগলেও বাস্তবে কার্যকর নয়। অনেক জায়গায় চিকিৎসক ও নার্সদের বায়োমেট্রিক তথ্যই নেওয়া হয়নি।
জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট-এর অনিকেত মাহাতোর দাবি, বায়োমেট্রিক বসানো থাকলেও শুরুর দিন থেকেই তা কাজ করছে না। নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের তথ্যও আপডেট করা হয়নি। সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম-এর সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাসের অভিযোগ, লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে মেশিন কেনা হলেও সেগুলি অনেক জায়গায় অকেজো হয়ে পড়ে আছে। কলকাতার কয়েকটি হাসপাতালে কাজ এগোলেও, জেলায় পরিস্থিতি একেবারেই সন্তোষজনক নয় বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসক সংগঠনগুলি। তাঁদের মতে, মহানগরে অন্তত কাজ শুরু হয়েছে, কিন্তু জেলা স্তরে এখনও কার্যত গতি শূন্য।