পুলিশকে হুমকি কাণ্ডের পর আবারও অস্বস্তিতে পড়লেন বীরভূমের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। যাঁর চারপাশে এতদিন মোতায়েন থাকত ওয়াই-প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা, এবার সেই নিরাপত্তায় কাটছাঁট করা হল। কমানো হল অনুব্রত মণ্ডলের সুরক্ষা ব্যবস্থা। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা কমানো শুধুই প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, নাকি তা কোনও বিশেষ বার্তা বহন করছে, এই নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনীতিতে।
আরও পড়ুন: SDPO অফিসে ২ ঘণ্টা জেরা!বেরিয়েই কেষ্ট গেলেন পার্টি কার্যালয়ে, সেখান থেকে কোথায়?
অনুব্রত মণ্ডলের গাড়ির আগে-পিছে পাইলট ও এসকর্ট গাড়ির বহর থাকত। ১৬ জন পুলিশ অফিসার ও কর্মী তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকতেন। তাঁর বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়িতেও ৪ থেকে ৬ জন সশস্ত্র পুলিশ নিরাপত্তার জন্য সবসময় মোতায়েন থাকতেন। তিহার জেল থেকে ফেরার পরেও তিনি ওয়াই প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পারছিলেন। এই সবই এখন থেকে অতীত। রাজ্যের নির্দেশে সে সবই ছাঁটাই হয়েছে। কালো পোশাক পরা বিশেষ বাহিনীর বদলে এবার সাধারণ খাকি পোশাকে কর্মীরা থাকছেন অনুব্রত নিরাপত্তায়, তাও কম সংখ্যায়।
এই নিরাপত্তা হ্রাসের বিষয়টি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, সম্প্রতি একটি অডিয়ো ক্লিপ ঘিরে ফের বিতর্কে জড়িয়েছেন বীরভূমের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা। সেই অডিয়োতে এক পুলিশ অফিসারকে হুমকি ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা যায় বলে অভিযোগ। সেই সূত্রে দফায় দফায় পুলিশ তলব করলেও অসুস্থতার অজুহাতে তা এড়িয়ে গিয়েছেন অনুব্রত। যদিও শেষমেশ তিনি হাজিরা দেন। এমনকী, তাঁর আইনজীবীরা এও দাবি করেন যে এটি একটি ষড়যন্ত্র, অডিয়োটি এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি।
এনিয়ে প্রথম থেকেই বিজেপির তরফে তীব্র আক্রমণ শানানো হয়েছে অনুব্রতকে। এই পরিস্থিতিতে অনুব্রতের নিরাপত্তা কমানো শুধুই প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, না কি তা কোনও বার্তা দিতে চাইছে তৃণমূল? তাই নিয়ে রাজনীতিতে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, পুলিশ প্রশাসনকে প্রভাবিত করার অভিযোগে অভিযুক্ত অনুব্রতর নিরাপত্তা হ্রাস করা আসলে ‘দূরত্ব’ বাড়ানোর ইঙ্গিত।
প্রসঙ্গত, এ বিষয়ে অবশ্য জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ মুখ খুলতে রাজি হননি। অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনিও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এমনকী জেলার তৃণমূল কোর কমিটির সদস্যরাও এই প্রসঙ্গে স্পষ্ট কিছু বলেননি, বরং বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন।