শারদোৎসবের আগে রাজ্য সরকার টোটো চালকদের জন্য নতুন ও কঠোর নীতি প্রণয়ন করেছে। ইতিমধ্যে এই নীতি কার্যকর হয়েছে। পরিবহণ দফতরের প্রকাশিত ১১ পাতার নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট রুট ছাড়া আর কোনও জায়গায় চলবে না তিন চাকার এই যান। দীর্ঘদিন ধরে শহর ও গ্রামাঞ্চলে টোটো চললেও তা মূলত বেআইনি ও নিয়মবহির্ভূত ছিল। এবার প্রশাসন অবাধ চলাচলের উপর রাশ টানতে উদ্যোগী হয়েছে।
আরও পড়ুন:নূন্যতম বয়স হতে হবে ১৮ বছর, না হলে চালানো যাবে না টোটো, নির্দেশ প্রশাসনের
পরিবহণ দফতরের সূত্রে জানা গেছে, জেলা স্তরে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রতিটি টোটো পাবে নির্দিষ্ট নম্বর প্লেট এবং কিউআর কোড, যা স্ক্যান করলেই বোঝা যাবে নির্ধারিত রুটের বাইরে টোটো গিয়েছে কি না। এছাড়া এক ব্যক্তির নামে একাধিক টোটোর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে। নতুন নীতির ফলে বার্ষিক কর নেওয়া হবে, যা আগে টোটো থেকে কোনও রাজস্ব আসত না, এবার সরকারের আয়ের নতুন উৎস তৈরি হবে। পরিবহণ দফতর জানাচ্ছে, বর্তমানে রাস্তায় চলমান টোটোর অধিকাংশই বেআইনি। ধীরে ধীরে এই টোটোর পরিবর্তে ই-রিকশা নামানো হবে, তবে তাড়াহুড়ো করা হবে না। প্রতিটি পুরসভা ও পঞ্চায়েত ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা করে রুট চিহ্নিত করা হবে। যেখানে টোটোর সংখ্যা বেশি, সেখানে রোটেশন পদ্ধতিতে চালানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যাত্রীনিরাপত্তার কারণে আগেও নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল যে জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় টোটো, অটো বা রিকশা চলবে না। তবে বাস্তবে এর প্রভাব দেখা যায়নি। এখনও বেআইনি টোটো-অটো চলাচল, যার ফলে যানজট বৃদ্ধি এবং দুর্ঘটনা ঘটছে। এছাড়া পণ্যবাহী যানগুলোর গতি শ্লথ হওয়ায় পরিবহণ ব্যবস্থারও ক্ষতি হচ্ছে। নতুন নির্দেশে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, জাতীয় ও রাজ্য সড়কে কোনওভাবেই এই ধরনের তিন চাকা যান চলবে না।
সম্প্রতি পরিবহণ দফতর, জেলা প্রশাসন, পুরসভা, টোটো সংগঠন ও পুলিশের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে রুট নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়। সরকারের লক্ষ্য হল যাত্রী নিরাপত্তা, যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং রাজস্ব আয়ের বৃদ্ধি। আশা করা হচ্ছে, নতুন নীতি কার্যকর হলে টোটো পরিবহণে শৃঙ্খলা ফিরবে এবং দীর্ঘ দিনের বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটবে।