হাইকোর্টে স্বস্তি পেলেন পুরকর্মীরা। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, আর দেরি নয়, আগামী ১০ মাসের মধ্যেই অবসরপ্রাপ্ত পুরকর্মীদের গ্র্যাচুইটির সমস্ত বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিতে হবে। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ও বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তের বেঞ্চ শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছে বহরমপুর পুরসভাকে।
আরও পড়ুন: চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ, বড় পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের
জানা যাচ্ছে, বহু বছর ধরে বহরমপুর পুরসভার একাধিক কর্মী অবসর নিয়েছেন। কিন্তু অবসরের পরও তাঁদের হাতে পৌঁছায়নি প্রাপ্য গ্র্যাচুইটি। অবশেষে ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকজন প্রাক্তন কর্মী কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। শুনানির সময় বেঞ্চ জানায়, এত বছর ধরে টাকা আটকে রাখা যায় না। পুরসভাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রাপ্য অর্থ দিতে হবে। আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, শুধু আসল নয়, সুদ-সহ টাকা মেটাতে হবে। যেদিন থেকে টাকা আটকে আছে, সেই দিন থেকে প্রতি বছরে ৮ শতাংশ হারে সুদ গণনা করে টাকা ফেরত দিতে হবে পুরকর্মীদের। আর যদি আগামী ১০ মাসের মধ্যে অর্থ ফেরত না দেওয়া হয়, তাহলে সুদের হার বেড়ে দাঁড়াবে ১১ শতাংশ।
শুনানিতে বহরমপুর পুরসভার সওয়ালকারী আইনজীবী অরিন্দম দাস বলেন, আগেও আদালতকে জানানো হয়েছে, পুরসভার আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। একমাত্র সম্পত্তি কর থেকেই কিছু আয় হয়, সেই টাকা দিয়েই বকেয়া মেটানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু আদালত এই যুক্তি মানতে নারাজ। বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, শুধু সম্পত্তি করের টাকায় এত বড় অঙ্ক মেটানো সম্ভব নয়।
বেঞ্চের স্পষ্ট নির্দেশ, গ্র্যাচুইটির বকেয়া মেটাতে পুরসভাকে একা ছেড়ে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে রাজ্য সরকারের অর্থ দফতরকে পাশে দাঁড়াতে হবে। আদালতের মন্তব্য, এই সমস্যা শুধুমাত্র বহরমপুরেই নয়, রাজ্যের একাধিক পুরসভায় একই অভিযোগ উঠেছে। কয়েক মাস আগে অন্য একটি মামলায় বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্ত পর্যন্ত বলেছিলেন, যদি পুরসভা কর্মীদের বকেয়া মেটাতে না পারে, তবে পুরসভা চালানোর অধিকারই হারাবে। আদালতের নির্দেশে বহু অবসরপ্রাপ্ত কর্মী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, বহুদিন ধরে আইনি লড়াই করে অবশেষে আশা জেগেছে। এখন দেখার বিষয়, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে পুরসভা এবং রাজ্য সরকার কতটা দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।