পুজোর মরসুমে ভিড় বাড়ার আগেই বোট বুকিং নিয়ে জালিয়াতি ও কালোবাজারি আটকাতে কঠোর পদক্ষেপ নিল সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ কর্তৃপক্ষ। পর্যটকদের জন্য যে সমস্ত বোট বা লঞ্চ জঙ্গলে প্রবেশ করে, সেগুলির বুকিং পদ্ধতিতে এবার বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে এই নতুন নিয়ম।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে বিপত্তি, মৎস্যজীবীকে গভীর নদীতে টেনে নিয়ে গেল কুমির
এতদিন অন্য কেউ সহজেই কোনও বোটের বুকিং স্লট আগাম দখল করে রাখতে পারতেন। প্রকৃত মালিক অনেক সময় টেরও পেতেন না। এর ফলে বিভ্রান্তি তৈরি হতো, অনেক প্রকৃত পর্যটক বোট না পেয়ে ভ্রমণ থেকে বঞ্চিত হতেন। এখন থেকে আর তা হবে না। নতুন নিয়ম অনুযায়ী বুকিংয়ের সময় সরাসরি বোট মালিকের ফোনে একটি ওটিপি যাবে। সেই কোড ছাড়া অনলাইনে বুকিং সম্পন্ন করা যাবে না। ফলে বোট মালিককে পাশ কাটিয়ে অন্য কারও পক্ষে বুকিং করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, যদি কোনও বোট বুকিং করেও নির্ধারিত দিনে জঙ্গলে না যায়, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে একই মালিকের বোট দু’বার এ রকম করলে তার লাইসেন্স সার্টিফিকেট এক মাসের জন্য স্থগিত রাখা হবে।
সুন্দরবনে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১২০টি বোট পর্যটকদের নিয়ে প্রবেশ করতে পারে। অভিযোগ ছিল, পুরনো নিয়মের ফাঁক গলে এক শ্রেণির অসাধু চক্র বুকিং স্লট আগাম আটকে রাখত। অথচ বাস্তবে পর্যটক না থাকলেও স্লট খালি হতো না। এতে প্রকৃত পর্যটকেরা বুকিংয়ের সুযোগ হারাতেন। ক্রমশ এই নিয়ে ক্ষোভ জমতে শুরু করায় কর্তৃপক্ষ নতুন প্রক্রিয়া চালু করল। এবার থেকে বোটে পর্যটকের সংখ্যা বুকিংয়ের সময় জানাতে হবে। আগে শেষ মুহূর্তে সংখ্যা বদল হলেও তা সিস্টেমে আপডেট করা যেত না। এখন মালিকরা তা সংশোধন করতে পারবেন।
এছাড়াও চালু হচ্ছে ওয়েটিং লিস্ট ব্যবস্থা। দৈনিক ১২০টি বোট বুকিং পূর্ণ হলে অতিরিক্ত আরও ২৮টি বোটকে অপেক্ষার তালিকায় রাখা হবে। যদি বুকিং করা কোনও বোট হঠাৎ বাতিল হয়, তবে ওয়েটিং লিস্ট থেকে পরবর্তী বোট সেই জায়গা পূরণ করবে। সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপ মূলত বুকিং নিয়ে যে জালিয়াতি চলছিল তা রুখতেই নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রকৃত বোট মালিক ও পর্যটকরা যাতে স্বচ্ছ নিয়মে ভ্রমণের সুযোগ পান, সেটাই লক্ষ্য।