পাকিস্তান ধরে নিয়ে গিয়েছিল। তারপর দু’দেশের মধ্যে চলে প্রবল টানাপোড়েন। তার পর ভারত ছাড়িয়ে আনে তাঁকে। উৎকণ্ঠায় দিন কেটেছিল গোটা পরিবারের। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ছুটে গিয়েছিলেন পাঠানকোটে। লাভ হয়নি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে চেষ্টা করেন। তার পর দেশে ফেরেন। হ্যাঁ, তিনি রিষড়ার বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউ। দেশে ফিরলেও বাড়ি ফেরা হয়নি। হাসপাতালে পরীক্ষা চলে তাঁর। এবার ঠিক একমাসের মাথায় বাড়ি ফিরছেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম সাউ। আর তাই সকাল থেকেই বাড়িতে আজ খুশির মেজাজ। বাড়িতে রাম আসছেন। এমনই বলছেন স্ত্রী।
তারিখ এপ্রিল ২৩। কর্মরত অবস্থায় ভুল করে সীমান্ত পেরিয়ে গিয়েছিলেন। তখন পাক রেঞ্জার্স আটক করে বাংলার বিএসএফ জওয়ানকে। আজ মে ২৩, বাড়ি ফিরছেন হুগলি রিষড়ার বাসিন্দা পূর্ণমকুমার সাউ। আজ, শুক্রবার বিকেল ৫টা নাগাদ পূর্ণম বাড়ি ফিরবেন বলে খবর মিলেছে। আর তাই নানা কাজের ফাঁকে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আছেন স্ত্রী রজনী। পথ চেয়ে বসে আছেন। এই এল বলে। কিন্তু সময় তো সে কথা বলছে না। পরিবার–সহ গোটা এলাকা এখন অপেক্ষা করছে। বাবার সঙ্গে খেলার জন্য অধীর অপেক্ষায় করছে ছেলে। পূর্ণমের বাড়ি ফেরার খবরে স্ত্রী রজনী রান্না করেছেন, পূর্ণমের পছন্দের লুচি, দুরকম তরকারি সঙ্গে মিষ্টি, দই। বিকেলে এলাকায় আনন্দ মিছিলের আয়োজন করেছেন পুরসভার চেয়ারম্যান।
আরও পড়ুন: মৌড়ীগ্রাম স্টেশনে একই লাইনে দুটি লোকাল ট্রেন, ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখে যাত্রীদের মধ্যে আলোড়ন
পূর্ণমকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বারবার ফ্ল্যাগ মিটিং হয়েছিল। তাও ছাড়েনি পাকিস্তান। গায়ের জোরে বিএসএফ জওয়ানকে আটকে রেখেছিল। অত্যাচার করেছিল। স্নান করতে দেয়নি। জল পান করতে দেয়নি। এমনকী খাবারও দেয়নি বলে ছাড়া পেয়ে অভিযোগ করেছিলেন বিএসএফ জওয়ান। ওয়াঘা থেকে আটারি সীমান্তে এসে প্রথম ফোন করেন স্ত্রী রজনীকে। কিন্তু বাড়ি ফিরতে পারেননি। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্ণমের স্ত্রী রজনী সাউয়ের পাশে ছিলেন। এবার দেশে ফেরার ৯ দিনের মাথায় হুগলির বাড়িতে ফিরছেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম সাউ।
বাড়ি ফেরার খবরে স্ত্রী রজনী জানান, এখন স্বামীর বাড়ি ফিরে আসার পথ চেয়ে আছেন তিনি। বাবা–মা বলছেন, ছেলে তাড়াতাড়ি ঘরে ফিরে আসুক। তবে পূর্ণমের বাবা–মা আগেই জানিয়ে রেখেছেন ছেলেকে আবার দেশরক্ষার কাজে পাঠাবেন। এখন ঘড়ির কাটা পাঁচটা ছোঁয়ার অপেক্ষায় তাকিয়ে আছেন সকলেই সেদিকে। একমাস পর আজ শুক্রবার রিষড়ার বাড়িতে ফিরছেন পূর্ণম। তাই হাসিমুখে স্ত্রী রজনী বলছেন, ‘এতদিন পর বাড়ি ফিরছে। খুব ভাল লাগছে। কিন্তু, ওর কাছে ফোন নেই। তাই কথা বলতে পারছি না। আজ বাড়ি ফিরলে ওর প্রিয় লুচি তরকারি এবং দই, মিষ্টি খাওয়াবো। কেকও কাটা হবে।’