আবার আতঙ্কের ছবি ধরা পড়ল মৌড়ীগ্রাম স্টেশনে। মৌড়ীগ্রাম স্টেশনে দেখা গেল একই লাইনে দুটি লোকাল ট্রেন। আজ শুক্রবার দক্ষিণ–পূর্ব রেলের খড়্গপুর শাখার আপ লাইনে পরপর দাঁড়িয়ে পড়ে দুটি লোকাল টেন। যদিও একই লাইনের ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকলেও পরে স্টেশন ছেড়ে পিছনের ট্রেনটিকে এগিয়ে যেতে দেখা যায়। আজ সকাল ৯টা ৪৫ মিনিট নাগাদ মৌড়ীগ্রাম স্টেশনে আবার একই লাইনে দুই লোকাল ট্রেন দেখা দেওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে তুমুল আলোড়ন পড়ে যায়।
এই ঘটনার পর রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, এই ধরনের ঘটনা খুবই স্বাভাবিক। তবে দক্ষিণ–পূর্ব রেল চলাচল স্বাভাবিক হতে বিস্তর সময় লেগে যায়। তার মধ্যে এই ধরনের ঘটনায় নিত্যযাত্রীদের মধ্যে আতঙ্কের বাতাবরণ সৃষ্টি করে। এই একইভাবে এক লাইনে দুটি ট্রেন চলে এসেছিল বলেই ঘটে গিয়েছিল করমণ্ডল রেল দুর্ঘটনা। যার জেরে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। প্রাণ গিয়েছিল প্রায় ৩০০ বেশি যাত্রীর। যা আজও মনে আছে মানুষজনের। সেখানে একই লাইনে দুটি লোকাল ট্রেন এসে যদি ধাক্কা লাগত তাহলে প্রচুর মানুষের মৃত্যু ঘটত।
আরও পড়ুন: বিদেশের মাটিতেও স্বাধীনতা সংগ্রামীর সমাধিস্থলে অভিষেক, এক্স হ্যান্ডেলে দিলেন বার্তা
এই কথা ভেবেই এখন অনেক যাত্রীই শিউরে উঠছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ বছরে শুধু রেল দুর্ঘটনাতেই প্রাণ হারিয়েছেন আড়াই লক্ষেরও বেশি মানুষ। অথচ দেশের প্রধান যোগাযোগের লাইফলাইন রেল। এই দুই লোকাল ট্রেনে থাকা একাধিক যাত্রীর বক্তব্য, ‘কপাল জোরে বেঁচে গিয়েছি। ধাক্কা লাগলে সব শেষ হয়ে যেত। এভাবে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রেলে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অথচ রেল কর্তৃপক্ষ একেবারে উদাসীন। দুটি লোকালের ধাক্কা লাগলে প্রাণ যেত। রেল কিছু টাকা দিয়ে তখন দায় সারতো।’
বেশ কিছুদিন আগে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের কাছে শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের সঙ্গে মালগাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছিল। তাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। প্রাণ গিয়েছিল মানুষের। আবার উত্তরপ্রদেশের গোন্ডায় ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ায় যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এক্ষেত্রেও একই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রেলের বিরুদ্ধে মানুষের বিস্তর ক্ষোভ রয়েছে। সেটা দূরপাল্লার ট্রেন হোক বা লোকাল ট্রেন। যাত্রী সুরক্ষা, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য, যাত্রী নিরাপত্তা এখন রেলে নেই বলেই অভিযোগ সাধারণ মানুষের।