রামপুরহাটে এক নাবালিকা ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার জেরে এই জঘন্য কাজ করছে তার প্রেমিক। রামপুরহাট থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় গণধর্ষণ এবং পকসো আইনের ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত ইনজামুল ইসলাম নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে, তবে তার দুই সঙ্গী এখনও পলাতক। বুধবার আদালতে ধৃতকে হাজির করা হলে বিচারক তার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: সিবিআইয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি অভয়ার বাবা মা-র
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ইনজামুল ইসলাম (২০) পাইকর থানার কাশিমনগর গ্রামের বাসিন্দা। পাইকরের কুতুবপুর গ্রামে তার একটি কাপড়ের দোকান রয়েছে। প্রায় এক বছর আগে একটি ভুল নম্বরে ফোন কলের মাধ্যমে মাড়গ্রাম থানা এলাকার ১৫ বছর বয়সি এক ছাত্রীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর ঘন ঘন ফোনালাপের মাধ্যমে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে ছাত্রীর পরিবার এই সম্পর্কের বিরোধিতা করে। ছাত্রীর দাদু জানান, তিনি ইনজামুলকে ফোন করে তার নাতনির সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করতে বলেছিলেন এবং মেয়ের বিয়ে অন্যত্র দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। এমনকি ইনজামুলের ফোন নম্বর ব্লক করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও যুবকটি মাঝে মাঝে মোটরবাইকে করে এলাকায় ঘুরে বেড়াত এবং ছাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালাত।
পরিবারের অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রীটি রেজিস্ট্রেশন ও ব্যাঙ্কের কাজে রামপুরহাটে আসে। জাতীয় সড়কের ভাঁড়শালা মোড়ে টোটো থেকে নামার পর কিছুটা হেঁটে যাওয়ার সময় ইনজামুল তার পথ আটকায়। অভিযোগ, ছাত্রীর মুখ চেপে ধরে তাকে জোর করে মোটরবাইকে তুলে নেয়। ইনজামুলের সঙ্গে আরও দুটি মোটরবাইক ছিল, তাতে তার দুই বন্ধু ছিল। তারা মল্লারপুরের কাছে জাতীয় সড়কের পাশে জঙ্গলঘেরা একটি মাঠে ছাত্রীকে নিয়ে যায়। সেখানে রুমাল দিয়ে তার মুখ বেঁধে ইনজামুল তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তার দুই বন্ধু এই অপরাধে তাকে সহায়তা করে বলে অভিযোগ। ছাত্রীটি জানায়, সে ইনজামুলের সঙ্গীদের চেনে না।
বিকেলের দিকে অভিযুক্তরা ছাত্রীকে রক্তাক্ত ও আহত অবস্থায় ভোল্লা ক্যানেল মোড়ের কাছে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ছাত্রীর মা জানান, মেয়ে তাকে ফোন করে ঘটনার কথা জানায়। তিনি বলেন, মেয়ে হাঁটতে পারছিল না। তার পোশাকে কাদা ও রক্তের দাগ ছিল। জিজ্ঞাসা করায় সে অত্যাচারের কথা বলে। ছাত্রীকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। সে এখনও বিছানা থেকে উঠতে পারছে না।এই ঘটনা এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, পলাতক দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।