শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে শোকজ করা হয়েছে আগেই। তবুও তৃণমূল কংগ্রেসের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে নিজের অবস্থান থেকে এক ইঞ্চি নড়লেন না শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র পারিষদ দিলীপ বর্মন। শুক্রবার ফের মেয়র পরিষদের বৈঠকে অনুপস্থিত থেকে কার্যত বয়কট করলেন তিনি। এর আগে একবার বৈঠকে যোগ দেননি দিলীপ। পরপর দু’বার বৈঠক বর্জন করায় চাপে পড়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: কলকাতার পর শিলিগুড়িতে তৈরি হচ্ছে পশুদের জন্য শ্মশান, অভিনব উদ্যোগ পুরসভার
দলীয় শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও প্রকাশ্যে কিছু না বললেও, গোপনে অস্বস্তি বাড়ছে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, নিচুতলার কর্মীদের একাংশ দিলীপের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, প্রকাশ্যে মেয়র গৌতম দেব ও ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকারের বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করা একজনের বিরুদ্ধে দলকে আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। পুরসভা সূত্রে খবর, প্রতি মাসে দু’টি করে মেয়র পরিষদের বৈঠক হয়। সেখানেই শহরের উন্নয়নমূলক প্রকল্প ও নয়া প্রস্তাব পেশ করা হয়। পরে বোর্ড মিটিংয়ে সেগুলি পাশ হয় এবং বাস্তবায়নের পথে যায়। কিন্তু দিলীপ বর্মনের অনুপস্থিতিতে তাঁর অধীনে থাকা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ ট্রেড লাইসেন্স, ক্রীড়া ও আবাসনের কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার বৈঠক বর্জন করার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে দিলীপ বলেন, বোর্ড মিটিংয়ে প্রশ্ন করার জন্য তাঁকে অপমান করা হয়েছে। সেই বিষয়টি দলের রাজ্য কমিটির কাছে জানিয়েছেন। যতদিন ইতিবাচক উত্তর না পাচ্ছেন, ততদিন এমআইসি সভা, বোর্ড মিটিং বা দলের বৈঠকে যোগ দেবেন না। তবে তাঁর দায়িত্বের বিভাগের নিয়মিত কাজ তিনি পুরসভায় গিয়ে করে দেবেন। অপমান সহ্য করতে পারবেন না। উল্লেখ্য, শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি ইতিমধ্যেই তাঁকে শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছেন। কিন্তু দিলীপ বর্মন নিজের অবস্থান থেকে সরে আসার কোনও ইঙ্গিত দেননি।
তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা চেয়ারম্যান (সমতল) সঞ্জয় টিবরেওয়াল বলেন, এটা দলীয় বিষয়, বাইরে কিছু বলা যাবে না। তবে দলের একাংশ মনে করছে, বারবার বৈঠক বর্জন করে সংগঠনের ক্ষতি করছেন দিলীপ। ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি মহম্মদ জহুরের কথায়, বহুবার দলকে জানানো হয়েছে মেয়র পারিষদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। দলের অন্দরে চাপানউতোর বাড়লেও মেয়র ও ডেপুটি মেয়র এখনও এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, দিলীপ বর্মনের অবস্থান বজায় থাকলে শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র পরিষদে রদবদলের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।