চোরকে পাকড়াও করে জ্যোৎস্না বর্মণের বাড়িতে নিয়ে যায়। চোরকে সেখানে বেঁধে রাখা হয়। জ্যোৎস্না অন্যের বাড়িতে রান্নার কাজ করেন। তাঁর দরজার তালা ভেঙে চুরি হয়ে গিয়েছে। চোর ধরাও পড়েছে বলে খবর পান। তখন বাড়িতে ফিরে দেখেন সোনার চেন, নগদ টাকাও উধাও। চুরি হওয়া ১০০০ টাকা উদ্ধার হয়। সোনার চেনটি মেলেনি।
চোরকে খাওয়ালেন ভাত, লাউ চিংড়ি, মাছের ঝোল।
চুরি করতে এসে ধরা পড়ে গেল চোর। বিনিময়ে জুটল না প্রহার। এমনকী করা হল না গালিগালাজ। উলটে চোরের হাতের বাঁধন খুলে দিলেন গৃহকর্ত্রী। তারপর জামাই আদরে খাওয়ালেন ভাত, লাউ চিংড়ি, মাছের ঝোল। চোর তখন এমন আপ্যায়ন পেয়ে হতবাক। তার জীবনেও এটা প্রথম অভিজ্ঞতা। মাল ব্লকের চেল কলোনির এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। পুলিশ গৃহকর্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে রাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে বলে খবর। ধৃতের নাম অমর সাহানি। এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছে মালবাজারে? স্থানীয় সূত্রে খবর, চুরি করে জিনিসপত্র সমেত বমাল ধরা পড়ে চোর অমর সাহানি। তখন এলাকার বাসিন্দারা চোরকে মারতে উদ্যত হলে গৃহকর্ত্রী জ্যোৎস্না বর্মণ বাধা দেন। আর চোরের হাতের বাঁধন খুলে দেন। তারপর বাড়ির বারান্দায় চোরকে বসিয়ে থালা ভর্তি ভাত, মাছের ঝোল, কচুরশাক, ডাল, লাউ চিংড়ি খাওয়ান। এই ঘটনা দেখে এলাকার বাসিন্দারা হতবাক। এমন ঘটনা ঘটবে তাঁরা ভাবতে পারেননি। বরং মেরে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে এটাই দস্তুর। সেখানে কিনা চব্য–চষ্য খানাপিনা!
কেন এমন করলেন গৃহকর্ত্রী? চোরকে এভাবে আপ্যায়ন করে খাওয়ানো কার্যত বিরল। তবে গৃহকর্ত্রী জ্যোৎস্না বর্মণ বলেন, ‘ওই যুবক বারবার বলছিল খিদের জ্বালায় চুরি করেছি। তাই ওর খিদে মেটানোর জন্য পেট ভরে খাওয়ালাম। ওই যুবক চোর অবশ্য টাকা ফেরত দিলেও সোনার চেনটি ফেরাতে পারেনি। তাই একটি ছোট ঘরে ওকে আটকে রেখেছিলাম। পরে খবর পেয়ে পুলিশ আসে। তাকে নিয়ে যায়।’ মাল থানার পুলিশ সূত্রে খবর, ওই চোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চুরি যাওয়া সোনার চেনটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।