রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে ভারত ও চিনকে নিশানা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চ থেকে ট্রাম্প দাবি করেন, রাশিয়ার থেকে তেল কিনে ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়ন করছে ভারত ও চিন। এই আবহে ভারতে নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূত জু ফেইহং ভারত ও চিনকে একজোট হয়ে শুল্ক ও বাণিজ্য যুদ্ধের বিরোধিতা করার আহ্বান জানালেন। উল্লেখ্য, এর আগে চিনে অনুষ্ঠিত এসসিও সম্মেলনে মোদী-পুতিন-জিনপিংয়ের একসঙ্গে দাঁড়িয়ে কথা বলা এবং হাত ধরাধরি করার চিত্র আমেরিকায় শিড়দাঁড়ায় বিদ্যুৎ তরঙ্গের মতো খেলেছিল। আমেরিকার মনে সেই 'আতঙ্ক' জিইয়ে রাখতে ভারতকে চিনের সঙ্গে হাত মেলানোর বার্তা দিলেন জু ফেইহং।
মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত জু ফেইহং বলেন, ভারত ও চিনের উচিত যৌথভাবে ক্ষমতার রাজনীতি, আধিপত্য প্রদর্শন করা। একসঙ্গে যে কোনও ধরনের শুল্ক বা বাণিজ্য যুদ্ধের বিরোধিতা করা উচিত আমাদের দুই দেশের।' চিনের ৭৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত একটি চার দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য দুই দেশকে সঠিক পথ অনুসরণ করতে হবে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আস্থা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং অভিন্ন উন্নয়নের উপর ভিত্তি করে তৈরি হবে সেই পথ। তিনি আরও বলেন যে সীমান্ত বিরোধকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে দেওয়া উচিত নয় এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে কারণ এর বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
চিনা রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেছেন যে চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে অগস্ট পর্যন্ত, ভারত ও চিনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১০.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। তিনি বলেন, সাধারণ স্বার্থের বৃহত্তর পরিসর তৈরি করতে চিন ভারতের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত। এর পাশাপাশি, চিনা দূতাবাস এবং কনস্যুলেটগুলি এই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২ লাখ ৬৫ হাজারেরও বেশি ভারতীয় নাগরিককে ভিসা জারি করেছে। এই প্রসঙ্গে জু বলেন, 'আমরা ভারতের সঙ্গে সব স্তর ও অঞ্চলে বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময় বাড়াতে চাই এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া ও বন্ধুত্বকে আরও গভীর করতে চাই আমরা।'
মোদী-শি বৈঠকের কথা উল্লেখও করেন চিনা রাষ্ট্রদূত। তিয়ানজিনে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে সাম্প্রতিক বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুই নেতার বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভারত-চিন সম্পর্ককে স্থিতিশীল ও স্বাস্থ্যকর উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রস্তুত বেজিং। এদিকে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে ভারত ও চিনের ওপর তীব্র আক্রমণ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি অভিযোগ করেন যে উভয় দেশই রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনে ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়ন করছে। ট্রাম্প বলেন, 'রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনে চিন ও ভারত এই যুদ্ধের প্রধান অর্থায়নকারী হিসেবে উঠে এসেছে। তাদের অবিলম্বে সমস্ত জ্বালানি ক্রয় বন্ধ করা উচিত।'