আলিপুরদুয়ার জেলার জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের জঙ্গলে বাইসনের হামলায় এক বনকর্মীর মৃত্যু হল। বৃহস্পতিবার দুপুরে পূর্ব জলদাপাড়া রেঞ্জের মালঙ্গি বিটের ১ নম্বর কম্পার্টমেন্টে এই ঘটনা ঘটে। মৃত বনকর্মীর নাম দুলাল রাভা (৫১)। তিনি চিলাপাতা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। জঙ্গলে টহল দেওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: আলিপুরদুয়ারে হাতির হানায় মৃতদের ৩৪% নেশাগ্রস্ত ছিলেন, চাঞ্চল্যকর দাবি বন বিভাগের
জানা গিয়েছে, রুটিন টহলদারির অংশ হিসেবে ওইদিন চারজন অরণ্যসাথী দুটি কুনকি হাতিতে চেপে জঙ্গলের ভিতর প্রবেশ করেছিলেন। তখনই দুলাল রাভার সন্দেহ হয় জঙ্গলের নদীর ধারে কেউ মাছ ধরছে। সেই দেখে তিনি হাতি থামিয়ে নদীর দিকে হেঁটে এগোতে থাকেন। ঠিক তখনই একটি বুনো বাইসন আচমকা তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলেই গুরুতর জখম হন তিনি।সহকর্মীরা দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে চিকিৎসকেরা জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের সুপার ডাঃ শুভাশিস শী জানান, বাইসনের শিং ও ধাক্কায় তাঁর কোমর ও পিঠে মারাত্মক চোট লাগে, যা প্রাণঘাতী হয়।
বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, মৃত দুলাল রাভার স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছেন। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে অনেকদিন আগেই। দফতর সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে মৃতের ছেলেকে সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও প্রবীণ কাসোয়ান বলেন, এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। পরিবারকে সমস্তরকম সহায়তা করা হবে। সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণও দেওয়া হবে। ঘটনার পরেই চিলাপাতা থেকে মৃতের পরিবারের সদস্যরা ছুটে আসেন হাসপাতালে। শোকস্তব্ধ পরিবারের কেউ কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। দুলালের এক আত্মীয় বলেন, দুপুরে খবর পাওয়ার পর ফালাকাটা আসেন। এসে দেখেন দুলাল বাবু আর বেঁচে নেই। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবারই মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে। বনদফতরের এক আধিকারিক জানান, জঙ্গল বন্ধ থাকার সময়ও টহলদারি চালানো হয় বনজীবনের নিরাপত্তা ও পাচার রুখতে। কিন্তু এইভাবে হঠাৎ বাইসনের হামলা যে প্রাণ কেড়ে নেবে, তা কেউ ভাবেননি। এখন শোকের ছায়া নেমে এসেছে বনকর্মী মহলে।