আলিপুরদুয়ারের বনাঞ্চল সংলগ্ন এলাকাগুলিতে একের পর এক হাতির হানায় প্রাণ হারাচ্ছেন মানুষ। তবে মৃত্যুর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এবার নতুন একটি তথ্য উঠে এল বন দফতরের হাতে। তথ্য অনুযায়ী, যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের একটি বড় অংশ সেই সময় নেশাগ্রস্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাতে লোডশেডিং, বাড়ির বাইরে বেরোতেই হামলা চালাল হাতি, মৃত্যু একই পরিবারের ৩ জনের
গত তিন মাসে জেলার বিভিন্ন এলাকায় হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে বা হানায় অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মৃতদের মধ্যে প্রায় ৩৪ শতাংশ ব্যক্তি ঘটনার সময় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। এই তথ্য উঠে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে বন দফতর। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন গ্রামগুলোতে এখন রাত হলেই হাতির আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে। প্রায়ই দেখা যাচ্ছে, ছোট-ছোট দলে ভাগ হয়ে হাতির দল ঢুকে পড়ছে গ্রামে। তারপরেই খাবারের খোঁজে বাড়িতে বাড়িতে হামলা দিচ্ছে দাঁতালের দল। আর তাতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।
এ বিষয়ে বন আধিকারিক পারভিন কাসওয়ান জানাচ্ছেন, মানুষকে নিয়ম মানার অনুরোধ করা হচ্ছে। কিন্তু, অনেক সময় মানুষই নিজেই বিপদ ডেকে আনেন। নিজেরাই বাইরে বের হন, কেউ কেউ আবার নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকেন।
সম্প্রতি ফালাকাটার কুঞ্জনগরে যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, তাতে নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গভীর রাতে একটি হাতি ঢুকে পড়ে এলাকায়। এরপর সেই হাতির হানায় মৃত্যু হয় একই পরিবারের তিনজনের। এই ঘটনার পর থেকেই বন দফতর আরও কড়াকড়ি শুরু করেছে। যেসব এলাকায় হাতির গতিবিধি বেশি, সেখানে টহলদারি দলকে বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, যদি কেউ মদ্যপ অবস্থায় ঘোরাফেরা করেন, তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে বন বিভাগের গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে।
বনকর্তারা জানাচ্ছেন, অনেকেই সন্ধ্যার পর চোলাই বা দেশি মদ খেয়ে বাড়ির বাইরে বসে থাকেন। আবার কেউ-কেউ নিজের বাড়িতেই ওই ধরনের পানীয় মজুত রাখেন। এগুলি হাতিদের আকৃষ্ট করতে পারে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। বন বিভাগ সূত্রের খবর, পরিস্থিতি সামাল দিতে এখন মোট ২৮টি বিশেষ টহলদারি দল নামানো হয়েছে। তাছাড়া, মাইকে করে প্রচার করে বারবার সচেতন করে বলা হচ্ছে, ‘হাতি ঢুকে পড়লেই ঘরের মধ্যে থাকুন। বন বিভাগকে খবর দিন। বাইরে বেরোবেন না।’