বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তাই এখন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। আয়ুষ্মান ভারত বহুদিন আগে ঘোষণা করা হলেও বাংলায় তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। উলটে জনপ্রিয় হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের স্বাস্থ্যসাথী। বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসা করে সুস্থ হতে পারছেন সাধারণ মানুষ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য।
রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প ব্যাপক কাজ করেছে। সেটা বাংলায় পা রেখেই বুঝতে পেরেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। শুধু তাই নয়, এতে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্ক বেড়েছে গ্রামবাংলায়। তাই এবার রাজ্যের একেবারে প্রান্তিক স্তরের মানুষের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প বাস্তবায়িত করার পক্ষে সওয়াল করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রতি আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করার বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। এদিন শহরে এসে মন্ত্রী ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফার্মাসিউটিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ’–এর নতুন ক্যাম্পাস ও উৎকর্ষ কেন্দ্র তৈরির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে যান পানিহাটিতে।
ঠিক কী বলেছেন মন্ত্রী? রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রী। তারপরই আয়ুষ্মান ভারতের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে রাজ্য সরকারকে বলে জানান। আর মন্ত্রী বলেন, ‘সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা পরিষেবা যাতে রাজ্যের সকল মানুষের কাছে পৌঁছয়, সেটা নিশ্চিত করতে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছি।’ প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো মিশন, টেলিমেডিসিন পরিষেবা, রাজ্যের ডাক্তারি শিক্ষা এবং সিকল সেল অ্যানিমিয়া দূরীকরণ প্রকল্পের পর্যালোচনাও করেন মন্ত্রী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, পঞ্চদশ অর্থ কমিশন রাজ্যের ২২৩টি ব্লক স্বাস্থ্য ইউনিট গড়ে তোলার জন্য ১৮০ কোটি ১২ লক্ষ টাকা এবং ৭১৯টি উপ–স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ার জন্য ২৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? এরপর পানিহাটিতে বেঙ্গল কেমিক্যালের ২০ একর জমিতে নাইপারের নতুন ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে ৭৮ কোটি ও উৎকর্ষ কেন্দ্রের জন্য ১০০ কোটি টাকা কেন্দ্র বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘উৎকর্ষ কেন্দ্র থেকে ফার্মাসিউটিক্যাল শিক্ষার প্রসার ঘটবে। আর নতুন ক্যাম্পাস থেকে উন্নত গবেষণা হবে। একাধিক শিল্প সংস্থার সঙ্গে যোগসূত্র গড়ে উঠবে।’ এগুলি আগামী প্রজন্মের কাছে এই কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলেও জানান তিনি। ফার্মা ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য পড়ুয়ারা রাজি। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে তা সম্ভব হয় না। তার জন্যই প্রতিটি সেক্টরে নাইপার–কে উৎকর্ষ কেন্দ্র করা হচ্ছে।
কেন এমন সওয়াল মন্ত্রীর? বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তাই এখন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। আয়ুষ্মান ভারত বহুদিন আগে ঘোষণা করা হলেও বাংলায় তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। উলটে জনপ্রিয় হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের স্বাস্থ্যসাথী। বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসা করে সুস্থ হতে পারছেন সাধারণ মানুষ। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলায় মেধার অভাব নেই। দেশের যুবকদের যাতে বাইরে যেতে না হয়, তার জন্যই এমন প্রচেষ্টা।’ তবে ভিত্তিপ্রস্তরের ফলকে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক নির্মল ঘোষ এবং সাংসদ সৌগত রায়ের নাম থাকলেও তাঁরা আসেননি।