মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার গাজা শান্তি পরিকল্পনার ঘোষণা করলেন। গাজায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধ থামিয়ে সেখানে শান্তি ফেরার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর হোয়াইট হাউস সফরের সময়ই এই শান্তি প্রস্তাব প্রকাশ করা হয়। এই পরিকল্পনার অনুযায়ী, গাজায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি, প্যালেস্তিনীয় ভূখণ্ড থেকে ইজরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, বন্দি মুক্তি এবং প্যালেস্তিনীয় ভূখণ্ডে একটি নতুন সরকারের রোডম্যাপ দেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাবে বলা হয়েছে যে উভয় পক্ষের চুক্তিতে ইজরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা হবে। এবং এর সাথেই গাজায় যুদ্ধ অবিলম্বে শেষ হবে। পাশাপাশি হামাসের হাতে থাকা সব বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। হোয়াইট হাউজের শান্তি প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, গাজায় একটি অস্থায়ী অরাজনৈতিক সরকার গঠন করা হবে। গাজার প্রশাসন পরিচালনের দায়িত্ব থাকবে তাদেরই ওফর। এদিকে ইজরায়েল গাজা স্ট্রিপটি দখল করবে না। গাজার অস্থায়ী সরকারে প্যালেস্তিনীয় এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। প্যালেস্তিনীয়দের গাজা ত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে না এবং ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী প্যালেস্তিনীয় ভূখণ্ড থেকে প্রত্যাহার শুরু করবে। একবার উভয় পক্ষের কাছ থেকে শান্তি প্রস্তাব গ্রহণ করা হলে হামাস নিরস্ত্রীকরণ করবে। ২০২৩ সালের ৭ অকটোবরে হামাস যে সকল প্যালেস্তিনীয়কে বন্দি করেছিল, তাদের জীবিত বা মৃত অবস্থায় মুক্ত করা হবে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের মতে, হামাসের হাতে এখনও ৪৮ জন বন্দি থাকার কথা, তাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে এর বিনিময়ে, ইজরায়েল যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আটক ২৫০ জন যাবজ্জীবনের সাজা পাওয়া গাজাবাসী এবং ১৭০০ জন প্যালেস্তিনীয়কে মুক্তি দেবে। প্রতি ১ জন ইজরায়েলি বন্দির মুক্তির বিনিময়ে ১৫ জন প্যালেস্তিনীয়র মৃতদেহ হস্তান্তর করা হবে। শান্তি প্রস্তাব গৃহীত হলে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র সহাবস্থানের জন্য ফিলিস্তিনি ও ইজরায়েলিদের মধ্যে সংলাপের সুযোগ করে দেবে।
হামাস নিয়ন্ত্রিত প্যালেস্তিনীয় ভূখণ্ডে একটি টেকনোক্র্যাটিক, অরাজনৈতিক প্যালেস্তিনীয় কমিটি গঠন করা হবে। তারাই সরকারি পরিষেবা এবং দৈনন্দিন প্রশাসনিক পরিচালনা চালাবে। ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন একটি 'বোর্ড অব পিস' এই কমিটির তত্ত্বাবধানে থাকবেন এবং এতে ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারসহ অন্যান্য বিশ্ব নেতারা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। গাজার অভ্যন্তরে ইজরায়েলি 'নিরাপত্তা পরিধির উপস্থিতি' বজায় রাখবে। এর অর্থ হতে পারে যে ইজরায়েল গাজার অভ্যন্তরে একটি বাফার জোন রাখবে। প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, গাজায় ভবিষ্যতে প্যালেস্তিনীয় জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসের কোনও ভূমিকা থাকবে না। নেতানিয়াহু শান্তি প্রস্তাব গ্রহণ করলেও হামাস এখনও শান্তি পরিকল্পনার বিষয়ে সাড়া দেয়নি।