আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে বিজেপি নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করল। আর সেই জেলা কমিটিতে গেরুয়া শিবির এবার ভরসা রাখল পুরনো কর্মী-নেতাদের উপরেই। নতুনদের সংযুক্তি থাকলেও আসল জায়গা পেয়েছেন অভিজ্ঞরাই। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, লোকসভা ও উপনির্বাচনে ধারাবাহিক ধাক্কা খাওয়ার পর জেলা সংগঠনকে ধরে রাখতে বিজেপি বাধ্য হয়ে পুরনোদের অগ্রাধিকার দিয়েছে।
আরও পড়ুন: পুলিশের বিরুদ্ধে ‘উস্কানিমূলক মন্তব্য’, থানায় হাজিরা এড়ালেন BJP-র অশোক দিন্দা
কোচবিহারে ৯১ জনকে নিয়ে ঘোষিত জেলা কমিটিতে বহু পরিচিত মুখ ফের জায়গা পেয়েছেন। লোকসভায় ভরাডুবি এবং সিতাই উপনির্বাচনের পর একাধিক নেতা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সংগঠন কার্যত ধুঁকছিল। এমনকি সভাপতি পরিবর্তন হলেও দীর্ঘদিন জেলা কমিটি গঠিত হয়নি। এই পরিস্থিতিতেই মঙ্গলবার রাতে বিজেপি নেতৃত্ব তালিকা প্রকাশ করে। জেলা সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, সবাইকে নিয়ে কাজ করাই দলের লক্ষ্য। সংগঠনকে নতুনভাবে শক্তিশালী করে তুলতে চান তিনি।
অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ারের নতুন কমিটি নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। এখানে ২৬ জনের তালিকায় ১৬ জনই পুরনো কমিটির সদস্য। অর্থাৎ, অভিজ্ঞদেরই বেশি করে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বিজেপির জেলা সভাপতি মিঠু দাস স্পষ্ট জানাচ্ছেন, আদি-নব্য বলে কিছু নেই। আসলে অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর জন্যই পুরনো নেতাদের বেশি ঠাঁই দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু বিরোধীদের বক্তব্য একেবারেই আলাদা। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ও জেলা পরিষদের মেন্টর মৃদুল গোস্বামীর অভিযোগ, চা বলয়ে একসময় বিজেপির যে জমি ছিল তা ভেঙে পড়েছে। ভোট শেয়ারে ধস নামতেই জেলা কমিটিতে পুরনোদের জোর করে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, উনিশের লোকসভায় আলিপুরদুয়ারে সাড়ে দু’লক্ষ ভোটে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। একুশের বিধানসভায় পাঁচটি আসনই তাদের দখলে আসে। কিন্তু চব্বিশের লোকসভা ভোটে ব্যবধান নেমে আসে মাত্র ৭৬ হাজারে। মাদারিহাটের উপনির্বাচনে আরও বড় হারের ধাক্কা খেতে হয়। বর্তমানে বিজেপির ট্রেড ইউনিয়ন বিটিডব্লিউইউয়েও কার্যত অচলাবস্থা। ফলত, ক্রমশ দুর্বল হতে থাকা সংগঠনকে টিকিয়ে রাখতে দল যে আবার পুরনো নেতাদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে। আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের নতুন কমিটি তারই প্রমাণ।