ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে নানা রকম সমস্যায় পড়ছেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা। কোথাও বাংলায় কথা বলার জন্য থানায় আটক, তো কোথাও পরিচয়পত্র দেখিয়েও ‘বাংলাদেশি’ তকমা জুটে যাচ্ছে। এমনকি, কয়েকজনকে বাংলাদেশ সীমান্তে পুশব্যাক করার ঘটনাও ঘটেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবার বড় পদক্ষেপ নিয়েছে বীরভূম জেলা প্রশাসন। বীরভূমের প্রতিটি পরিযায়ী শ্রমিককে চিহ্নিত করে একটি পূর্ণাঙ্গ ডেটা ব্যাঙ্ক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। (আরও পড়ুন: বেজায় চটেছেন মহুয়া, এবার 'শ্বশুরবাড়ি' বয়কটের হুঁশিয়ারি মহুয়ার)
আরও পড়ুন: নদিয়ার ২৩ শ্রমিককে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক ওড়িশায়, বিজেপিকে তোপ মহুয়ার
জেলার তিনটি মহকুমায় অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। উদ্দেশ্য একটাই, জেলার কোনও পরিযায়ী শ্রমিক যেন রেজিস্ট্রেশন থেকে বাদ না যান। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, যাঁরা এখনও পর্যন্ত সরকারি তালিকায় নেই, তাঁদের খোঁজ করেই নাম অন্তর্ভুক্ত করার কাজ চলছে। সরকারি হিসাবে, বীরভূমে বর্তমানে ১,০১,২৮১ জন পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ৫৮ হাজার শ্রমিক রয়েছেন রামপুরহাট মহকুমায়। বোলপুর মহকুমায় ২৯ হাজার এবং সিউড়িতে ১৪ হাজারের মতো পরিযায়ী শ্রমিক কাজের জন্য অন্য রাজ্যে রয়েছেন। তবে স্থানীয় স্তরে একাধিক এমন শ্রমিকের খোঁজ মিলেছে যাঁদের নাম এখনও সরকারি খাতায় নেই। ফলে কোনও সমস্যা হলে সরকারি সাহায্য পেতে সমস্যা হয়। (আরও পড়ুন: দিল্লি গিয়েও মমতা বন্দনায় দিলীপ, 'দলত্যাগ' নিয়ে বিস্ফোরক প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি)
রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিজেপি শাসিত বেশ কিছু রাজ্যে বীরভূমের শ্রমিকদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে টার্গেট করা হচ্ছে। অনেক সময় বাংলায় কথা বলায় সন্দেহের বশে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হচ্ছে বা সরাসরি সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ছয়জন বীরভূমবাসীকে এমনভাবে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। তাঁদের মধ্যে দুই শিশু এবং এক নাবালক রয়েছে। (আরও পড়ুন: কসবা ধর্ষণে অভিযুক্ত মনোজিতের 'অনুপ্রেরণা' গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই!)
এছাড়া ওড়িশার একটি অঞ্চলে সাতজন পরিযায়ী শ্রমিক আটকে আছেন বলেও খবর মিলেছে। তাঁদের পরিবারও উদ্বিগ্ন হয়ে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সহ একাধিক রাজ্যের প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন সামিরুল। তিনি জানিয়েছেন, পরবর্তীতে সংসদেও এই ইস্যু তুলে ধরবেন।এই পরিস্থিতিতে জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষা ও স্বার্থ রক্ষায় ডেটা ব্যাঙ্ক তৈরির এই উদ্যোগকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, রেজিস্ট্রেশনের কাজ শেষ হলে ভবিষ্যতে ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে কোনও শ্রমিক সমস্যায় পড়লে জেলা প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবে।