ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কড়া নিরাপত্তা থাকলেও অনুপ্রবেশের নতুন নতুন কৌশল অবাক করে দিচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে। এবার একেবারে অভিনব কায়দায় ভারতের মাটিতে ঢোকার চেষ্টা করল বাংলাদেশের এক যুবক। ভুটান নম্বরের একটি ডাম্পার ট্রাকের চ্যাসিসের নীচে বসে সে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢুকে পড়ে। তবে শেষরক্ষা হয়নি। বিএসএফের তৎপরতায় হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় ওই যুবক।
আরও পড়ুন: কালীঘাটে ধৃত বাংলাদেশি কীভাবে পেলেন ‘খাঁটি ভারতীয়’ ড্রাইভিং লাইসেন্স?
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকালে, উত্তরবঙ্গের ফুলবাড়ি সীমান্তে। সূত্রের খবর, ডাম্পারটি বাংলাদেশের বাংলাবান্ধা থেকে বোল্ডার খালাস করে ভারতে ফিরছিল। সেই সময় নিয়মমাফিক তল্লাশিতে নেমে বিএসএফ জওয়ানদের চোখ পড়ে গাড়ির চ্যাসিসের দিকে। আর সেখানেই লুকিয়ে ছিল এক যুবক! এমন দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে যান উপস্থিত জওয়ানরা। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে।
পরবর্তীতে ডাম্পারটির চালক রঞ্জিত ওরাওঁ এবং অনুপ্রবেশকারী যুবক জীবন রায়কে আটক করে বিএসএফ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ওই যুবক বাংলাদেশের রংপুর জেলার বাসিন্দা এবং সে কোনও বৈধ নথি ছাড়াই ভারতের ভূখণ্ডে প্রবেশের পরিকল্পনা করেছিল। নিজের শরীর সঙ্কুচিত করে চ্যাসিসের মধ্যে বসে থাকার পরিকল্পনাই ছিল তার বাঁচার রাস্তা। যা এযাবৎ নজিরবিহীন বলেই দাবি করছে বিএসএফ। রাতের দিকে ধৃতদের নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এনজেপি থানার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই যুবকের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে এবং চালককেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
বিএসএফের এক আধিকারিক বলেন, প্রতিটি সীমান্ত পয়েন্টে কড়া নজরদারি চলে। কিন্তু এবার যে পদ্ধতিতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা হয়েছে, তা নজিরবিহীন। এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। তদন্ত শুরু হয়েছে, কোনও পাচারচক্র বা এজেন্টের ভূমিকা রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, এর আগে খড়িবাড়ি ও এনজেপি থানা এলাকায় ভুয়ো নথি বানিয়ে থাকা একাধিক বাংলাদেশি নাগরিককে ধরা পড়তে দেখা গেছে। তবে এবার যে কৌশলে ওই যুবক সীমান্ত পেরোনোর চেষ্টা করল, তা নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, সীমান্তে গাড়ি চলাচলের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এমন বিপজ্জনক উপায়ে অনুপ্রবেশের ঘটনা রীতিমতো উদ্বেগজনক। ভবিষ্যতে এই ধরনের অপচেষ্টা রুখতে নজরদারি ও স্ক্যানিং পদ্ধতিতে আরও আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করার তাগিদ বাড়ছে।