সন্দেশখালির তিন বিজেপি কর্মী খুনের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খেলেন শেখ শাহজাহান। ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিল, সিবিআই তদন্ত চলবে। সোমবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কেই সমর্থন জানিয়ে সিবিআই তদন্ত বহাল রাখল। ফলে তদন্তের রাশ থাকবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতেই।
আরও পড়ুন: সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের গেস্টহাউজ থেকে উদ্ধার ১০ কোটির জাল নোট, ধৃত ২
মামলার বয়ান অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জুন মাসে ভাঙ্গিপাড়ায় এক পরিবারের তিন বিজেপি কর্মীর উপর হামলার অভিযোগ ওঠে। গুলিতে প্রাণ যায় প্রদীপ মণ্ডল ও সুকান্ত মণ্ডলের। তৃতীয় ব্যক্তি, দেবদাস মণ্ডল এখনও নিখোঁজ। একই ঘটনায় মৃত্যু হয় কায়ুম আলি মোল্লা নামে এক তৃণমূল কর্মীরও। সেইসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে তখন তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল। মৃতদের পরিবারের তরফে ন্যাজাট থানায় দায়ের হয় অভিযোগ। নাম ওঠে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা শেখ শাহজাহানের। কিন্তু পরে, তদন্ত যায় সিআইডি-র হাতে। তারা চার্জশিট দেয়। তাতে দেখা যায়, সেই অভিযোগপত্রে শাহজাহানের নামই উধাও।
এই অবস্থায় মৃত প্রদীপ মণ্ডলের স্ত্রী পদ্মা মণ্ডল কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। দীর্ঘ চার বছর পর গত ৩০ জুন সিঙ্গল বেঞ্চ মামলার গুরুত্ব ও চার্জশিট ঘিরে প্রশ্ন তুলে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যান শেখ শাহজাহান। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ তাতে সায় দিল না। আদালত জানিয়ে দিয়েছে, সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তাকে নেতৃত্বে রেখে একটি স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট) গঠন করে তদন্ত চালিয়ে যেতে হবে।
প্রসঙ্গত, সন্দেশখালির ‘অঘোষিত শাসক’ হিসেবে পরিচিত শেখ শাহজাহান ইতিমধ্যেই রেশন দুর্নীতি ও ইডি অফিসারদের উপর হামলার মামলায় জেলবন্দি। প্রায় দুই মাস গা-ঢাকা দিয়ে থাকার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর একে একে সিবিআই এবং ইডি দুই সংস্থাই হেফাজতে নেয় তাঁকে ।এই অবস্থায় নতুন করে খুনের মামলায় তদন্ত চলার নির্দেশ যে তাঁর বিরুদ্ধে চাপ আরও বাড়াবে, তা নিয়ে সংশয় নেই।