পাঁচ গোলে দুরন্ত জয় এবং পরপর দু'টি গোলশূন্য ড্র। তাও আবার আগের ম্যাচে মুম্বই গিয়ে তাদের আটকে দিয়েছে লাল-হলুদ। সব মিলিয়ে বহু দিন পরে ইস্টবেঙ্গল শিবিরে স্বস্তির হাওয়া। ক্রিসমাসের আগে এই খুশির আমেজ ধরে রাখতে হলে শুক্রবার ঘরের মাঠে ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধে জিততে হবে স্প্যানিশ কোচ কার্লস কুয়াদ্রাতের দলকে।
গত পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই যারা জিতেছে এবং গত ছ’টি ম্যাচে যারা অপরাজিত, সেই ওড়িশা এফসি-ই এই মুহূর্তে চলতি ইন্ডিয়ান সুপার লিগে নজর কাড়া ছন্দে রয়েছে। । লিগের আর কোনও দলই তাদের গত পাঁচ ম্যাচের মধ্যে চারটিতে জেতেনি। এমন কী শীর্ষে থাকা এফসি গোয়াও না। তাই ঘরের মাঠে খেলা হলেও, ওড়িশাকে হারানোটা মোটেও সহজ হবে না ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে।
সে কথা বেশ ভালো ভাবেই জানেন লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ওড়িশা এফসি আটটি ম্যাচে অপরাজিত (আইএসএল ও এএফসি কাপ মিলিয়ে) থাকার পর কাল সল্টলেকে নামছে। এর মধ্যে একটা মাত্র ড্র করেছে ওরা। চারটে ক্লিন শিট রয়েছে ওদের। এই পরিসংখ্যানগুলো তো দুর্দান্ত। আমাদের পক্ষে ম্যাচটা বেশ কঠিন হবে। তবে আমরা মাত্র ২টি ম্যাচ জিতেছি। আরও ম্যাচ জিততে হবে। কারণ আমাদের স্বপ্ন প্লে-অফ। সেখানে পৌঁছতে হলে আমাদের আরও ম্যাচ জিততে হবে।’
পাশাপাশি সের্জিয়ো লোবেরাকে খুব ঘনিষ্ট ভাবে চেনেন বলেই, চিন্তার ভাঁজটা কুয়াদ্রাতের কপালে বেশ চওড়া হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘লোবেরার সঙ্গে বার্সেলোনায় আমি ২০ বছর আগে একসঙ্গে কাজ করেছি। আমরা ভালো বন্ধু। একে অপরকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করি। অবশ্যই ওরা আমাদের হারানোর চেষ্টা করবেই। আমরাও ওদের বিরুদ্ধে জয় পাওয়ার চেষ্টা করব। আগে যা হয়েছে, সব অতীত । এখন দল, পরিস্থিতি সবই আলাদা। আমরা দু’জনেই একটা নতুন প্রকল্পে হাত দিয়েছি। দেখা যাক কাল কে পয়েন্ট জিততে পারে।’
তবে কুয়াদ্রাত সঙ্গে পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, ‘ওডিশার বিরুদ্ধে এক পয়েন্ট পেলে আমি সন্তুষ্ট হব না। আমরা মাত্র দু'টি ম্যাচে জয় পেয়েছি। আরও জয় দরকার। প্লে অফে খেলার স্বপ্ন দেখছি আমরা। তাই আমাদের জিততে হবে।’
তবে দলের উন্নতি ও অগ্রগতি নিয়ে তিনি যে খুশি, তা কুয়াদ্রাতের কথাতেই স্পষ্ট। বলেন, ‘আমার মনে হয়, যে কোনও দলকে আমরা হারাতে পারি। এত দিন অনেকগুলো ম্যাচেই আমরা ফলের কাছে গিয়েও ফিরে এসেছি। কখনও এক গোলে জিতেছি, কখনও আবার এক গোলে হেরেছি। এর অর্থ, আমরা ভালো অবস্থাতেই রয়েছি।’
শুক্রবারের ম্যাচে আহমেদ জাহু, রয় কৃষ্ণ, দিয়েগো মরিসিওদের আটকানোটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে লাল-হলুদ ফুটবলারদের কাছএ। কুয়াদ্রাতের দাবি অবশ্য, ‘এখনও পর্যন্ত আমরা ভালো ভালো ফরোয়ার্ড ও মিডফিল্ডারদের আটকেছি। জর্জ পেরেরা দিয়াজ ও গ্রেগ স্টুয়ার্টের জুটিকে রুখেছি। আহমেদ জাহু এবং রয় কৃষ্ণ, আহমেদ জাহু এবং দিয়েগো মরিসিও বা এই তিন জনের কম্বিনেশনও খুব বিপজ্জনক। আমরা নিজেদের মতো খেলার চেষ্টা করছি। গত কয়েক সপ্তাহে আমরা কৌশলে অনেক উন্নতি করেছি। নতুন খেলোয়াড়রা নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় নেয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিশ্রম করলে তার ফল মেলে। দলে যে ইদানীং ধারাবাহিকতা এসেছে, এটা পরিশ্রমেরই ফল।’
ওডিশার সেটপিস আক্রমণ নিয়েও যে চিন্তায় রয়েছে লাল-হলুদ শিবিরের। কুয়াদ্রাত বললেনও, ‘সেট পিসে যে ওরা বিপজ্জনক, তা আমরা জানি। তাই আমরা সেট পিসে কী ভাবে ডিফেন্স করব, গত কয়েক দিন ধরে সেই অনুশীলন করেছি। এখনও পর্যন্ত সেট পিসের বিরুদ্ধে আমাদের রক্ষণ ভালোই খেলেছে। সেটপিস থেকে গোল করতে না পারলেও গোল বাঁচাচ্ছি। এই ম্যাচেও আশা করি, পরিকল্পনা অনুযায়ীই এই কাজটা করব আমরা।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।