গরুকে জাতীয় পশু ঘোষণা করে কোনও আইন প্রণয়নের কোনও পরিকল্পনা নেই কেন্দ্রের।সংসদে এমনটাই জানালেন মৎস্য, পশুপালন এবং দুগ্ধজাত দ্রব্যের কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী এস পি সিং বাঘেল।
লোকসভায় সিনিয়র বিজেপি নেতা ও উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াতের এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে মঙ্গলবার এই তথ্য দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এস পি সিং বাঘেল বলেন, 'না, স্যার । সংবিধানের ২৪৬ (৩) ধারা অনুযায়ী, কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির মধ্যে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা বণ্টনের অধীনে, প্রাণী সংরক্ষণ এমন একটি বিষয় যার উপর রাজ্য আইনসভার আইন প্রণয়নের একচেটিয়া ক্ষমতা রয়েছে।' কেন্দ্রীয় আরও মন্ত্রী বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৪ সালের ডিসেম্বর থেকে রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশন বাস্তবায়ন করছে, যাতে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে গরুর প্রচার, সুরক্ষা এবং লালন-পালনের জন্য গৃহীত উদ্যোগগুলিকে সমর্থন এবং শক্তিশালী করা যায়।' দুধ উৎপাদন সম্পর্কে, সংসদে রাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২০২৪ সালে দেশের মোট ২৩৯.৩০ মিলিয়ন টন দুধ উৎপাদনের ৫৩.১২ শতাংশ ছিল গরুর দুধ, যেখানে মোষের দুধ ছিল ৪৩.৬২ শতাংশ।
রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশন কী?
রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশন বা আর জি এম ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে চালু করে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশীয় গবাদি পশুর উন্নয়ন ও সংরক্ষণের জন্যই চালু করা হয় রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশন। এই প্রকল্পটি দুধের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এবং দুগ্ধ উৎপাদনকে গ্রামীণ কৃষকদের জন্য আরও বেশি লাভজনক করে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ২০২১ সাল থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত ২৪০০ কোটি টাকার বাজেটের মধ্যে এই রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশন ছাড়াও রাষ্ট্রীয় পশুধন বিকাশ যোজনাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশনের ফলে কর্মসূচির গবাদি পশুর উৎপাদনশীলতা এবং সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। ভারতের সমস্ত গবাদি পশু ও মহিষদের বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের কাছে বর্ধিত হবে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিশেষ করে মহিলারাও উপকৃত হবেন, কারণ পশুপালনের সঙ্গে জড়িত ৭০ শতাংশেরও বেশি কাজ মহিলারাই করে থাকেন।
রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশনের আওতায় কেন্দ্রীয় সরকার খেয়াল রেখেছে গবাদি পশুর প্রতি। এই কথা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই যে, ভারতের মতো দেশে পশুপালন মানুষের জীবিকার জন্য একটি বড় অংশ। সেখানে যদি গবাদি পশুর প্রজনন, সংরক্ষণ, দুধ উৎপাদনের হার বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়গুলির দিকে নজর দেওয়া যায়, তা হলে আখেরে লাভ হবে মানুষেরই।এই প্রকল্প প্রত্যক্ষ ভাবে দেশের গবাদি পশুর জন্য তৈরি হলেও এ কথা কোনও ভাবেই অস্বীকার করা যায় না যে, পরোক্ষ ভাবে এই প্রকল্প থেকে লাভবান হবে সাধারন মানুষই। কেন্দ্রীয় সরকার সে দিকেই কাজ করেছে।