প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সতর্কতার পরেই ফেন্টানিল তৈরির জন্য ব্যবহৃত প্রি-কর্সার পাচার করার অভিযোগে কয়েকটি ভারতীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের আধিকারিকদের ভিসা বাতিল করে দিয়েছে নয়া দিল্লির মার্কিন দূতাবাস। যদিও কোন সংস্থার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা উল্লেখ করেনি দূতাবাস।
এক বিবৃতিতে মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, 'বিপজ্জনক সিন্থেটিক মাদকদ্রব্য থেকে আমেরিকানদের সুরক্ষিত করতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের আধিকারিকদের ভিসা বাতিল এবং প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। মার্কিন দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবারের এই পদক্ষেপ মার্কিন অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনেরর বিভিন্ন ধারার অধীনে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে অভিযুক্ত এবং তাঁর পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য হিসেবে গণ্য হতে পারেন। দূতাবাস জানিয়েছে যে ফেন্টানিল তৈরির জন্য ব্যবহৃত প্রি-কর্সার পাচারকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের মার্কিন ভিসার জন্য আবেদন করার সময় কঠোর তদন্তের জন্য সনাক্ত করা হচ্ছে। চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জর্গান অ্যান্ড্রুজ বলেন, 'নয়া দিল্লিতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস অবৈধ মাদক পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতিতে অটল রয়েছে। অবৈধভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মাদক উৎপাদন ও পাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি এবং সংস্থাগুলি তাদের পরিবার-সহ দণ্ডের মুখোমুখি হবে, যার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার প্রত্যাখ্যান করাও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।'
এর আগেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন কংগ্রেসে দেওয়া এক বার্তায়, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মায়ানমার ও চিন-সহ ২৩টি দেশকে বড় মাদক উৎপাদক ও পাচারকেন্দ্র বলে দাবি করেছেন।হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এই তথাকথিত তালিকা তৈরি করা হয় মূলত সেই দেশগুলিকে চিহ্নিত করতে, যেখান থেকে অবৈধ মাদক সরাসরি উৎপাদিত হয় বা যাদের ভূখণ্ডকে পাচারের পথ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তালিকায় আফগানিস্তান, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা, মেক্সিকো-সহ একাধিক দেশ রয়েছে।এর মধ্যে আফগানিস্তান, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা ও মায়ানমারকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে ট্রাম্প বলেন, এই দেশগুলি মাদক নিয়ন্ত্রণে কার্যত ব্যর্থ।তবে মার্কিন স্বরাষ্ট্র দফতরের ব্যাখ্যা, তালিকাভুক্ত হওয়া মানে এই নয় যে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার মাদক দমনে নিষ্ক্রিয়। বরং ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিক কারণে এ ধরনের দেশগুলিতে অবৈধ উৎপাদন বা পাচারের সুযোগ তৈরি হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতে, অবৈধ মাদকের ব্যবসা সন্ত্রাসবাদ ও আন্তর্জাতিক সংগঠিত অপরাধকে অর্থ জোগাচ্ছে। বিশেষত ফেন্টানিল পাচার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ স্বাস্থ্য সঙ্কট তৈরি করেছে। ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের মধ্যে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই মাদক।শুল্ক ইস্যুতে এমনিতেই ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে চিড় ধরেছে। যদিও এই মুহূর্তে আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টায়। কিন্তু এরই মধ্যে এবার মাদক ইস্যুতে ট্রাম্পের দাবি এবং মার্কিন পদক্ষেপে শোরগোল ফেলে দিয়েছে।