নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকলেন জহর সরকার। আর তাতেই ভর করে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কে নিজের পদত্যাগপত্র দিলেন জহর সরকার। আরজি কর হাসপাতালের প্রতিবাদে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখি রবিবার সাংসদ পদে এবং দল থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। তারপর তাঁর কাছে এসেছিল নেত্রীর ফোন। কিন্তু বরফ গলেনি। তাই আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যসভা চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র পাঠালেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ জহর সরকার। সংসদীয় বিধি পালন করে নয়াদিল্লিতে জগদীপ ধনখড়ের দফতরে সশরীরে হাজির হয়ে তাঁর হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেন জহর সরকার।
এই ইস্তফাপত্র দিয়ে তিনি রাজনীতি থেকেও সরে গেলেন। সেটাই করবেন বলে আগেই জানিয়ে ছিলেন। জহর সরকারের ইস্তফার জেরে রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সংখ্যা কমে দাঁড়াল ১২। বাংলা থেকে ১৬টি রাজ্যসভা আসনের মধ্যে একটি খালি হয়ে গেল। তৃণমূল কংগ্রেসের ১২ জন ছাড়াও বাংলা থেকে বিজেপির দুই এবং বামেদের একজন রাজ্যসভা সাংসদ আছেন। সুতরাং একজন সাংসদ কমে যাওয়ার অর্থ সংসদের উচ্চকক্ষে একটু হলেও শক্তি কমে গেল। তবে ২০২২ সালে শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং পরে গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ায় দলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন জহর সরকার। তখন তিনি বলেছিলেন, দলের একদিক পচে গিয়েছে। বাড়ির লোকজন ও বন্ধুবান্ধবরা তাঁকে রাজনীতি ছাড়তে বলেছেন।
আরও পড়ুন: মাঝরাতে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া, হঠাৎ কী হল বিএনপি নেত্রীর?
তবে সে যাত্রায় আর সাংসদ পদ বা রাজনীতি কিছুই ছাড়া হয়নি। আর তৃণমূল কংগ্রেস লোকসভা নির্বাচনে ২৯টি আসন জেতে। আর এখন সংসদে বিরোধীদের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম শক্তি। তাই সব ঠিকই ছিল। সংসদে জোরালো আওয়াজ তুলতে দেখা গিয়েছিল জহর সরকারকে। মোদী বিরোধী হিসাবেই পরিচিত জহর সরকার। সেখানে এবার দল ও সাংসদ পদ ছেড়ে মমতা বিরোধী হয়ে যাবেন কিনা জহর সেটাই দেখার বিষয়। গত রবিবার আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিতে জহর সরকার লেখেন, ‘মাননীয়া মহোদয়া, বিশ্বাস করুন এখন রাজ্যের সাধারণ মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন ও রাগের বহিঃপ্রকাশ দেখছি, তার মূল কারণ কতিপয় পছন্দের আমলা এবং দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পেশিশক্তির আস্ফালন। আমার এত বছরের জীবনে এমন ক্ষোভ ও সরকারের প্রতি অনাস্থা আগে দেখিনি।’