কার্গিল যুদ্ধে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২৬তম কার্গিল বিদয় দিবসের কর্মসূচির সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। একটি বার্তায় ‘জয় হিন্দ!’ জানিয়ে কার্গিল যুদ্ধের সেনাদের স্মরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে, কার্গিল যুদ্ধে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তিনটি প্রকল্পের সূচনা করেন। ১৯৯৯ সালে আজকের দিনেই ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে ৷ ব্যর্থ যায়নি সেনাদের আত্মত্যাগ ৷ ২৬ বছর পরেও কার্গিল বিজয় দিবসে দেশবাসীর মাথা নত হয় শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায় ৷
শনিবার এক্স হ্যান্ডেলে রাষ্ট্রপতি লিখেছেন, 'কার্গিল যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনারা যে সাহস এবং বীরত্ব দেখিয়েছেন, দেশের জন্য যে আত্মত্যাগ করেছেন তাকে 'স্মরণ' করে ভারত প্রতি বছর ২৬ জুলাই কার্গিল বিজয় দিবস উদযাপন করে। কার্গিল বিজয় দিবস উপলক্ষে, আমি সেই সাহসী সেনাদের শ্রদ্ধা জানাই, যারা মাতৃভূমি রক্ষায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতেও দু'বার ভাবেননি। এই দিনটি আমাদের সেনাবাহিনীর অসাধারণ সাহস এবং দৃঢ়তার প্রতীক। দেশের জন্য তাদের নিষ্ঠা এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ সর্বদা দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করবে।' অন্যদিকে, এক বার্তা প্রধানমন্ত্রী জানান, 'সেনাবাহিনী সেদিনের আত্মত্যাগ প্রতিটি প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। কার্গিল বিজয় দিবসে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।'
আরও পড়ুন-‘সীমান্ত রক্ষা করুন, আপনার পরিবারের যত্ন নেব!’ সেনাকে বিশেষ উপহার কেন্দ্রের
এদিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ন্যাশানাল ওয়ার মেমোরিয়ালে পৌঁছে কার্গিল যুদ্ধে কর্তব্য পালনের সময় যারা দেশের জন্য আত্মবলিদান দিয়েছিলেন তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। সেখানে তিন বাহিনীর প্রধানরাও উপস্থিত ছিলেন। চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং এবং নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠিও শহিদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।অন্যদিকে, এই বিশেষ দিনে ভারতের সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। যার মধ্যে একটি পোর্টাল রয়েছে, যেখানে দেশবাসী শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারবে।এছাড়াও রয়েছে কিউআর কোড-ভিত্তিক অডিও গেটওয়ে, যার মাধ্যমে মানুষ ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের গল্প শুনতে পারবে।
আরও পড়ুন-‘সীমান্ত রক্ষা করুন, আপনার পরিবারের যত্ন নেব!’ সেনাকে বিশেষ উপহার কেন্দ্রের
১৯৯৯ সালের এই দিনে, ভারতীয় সেনাবাহিনী 'অপারেশন বিজয়'-এর সফল সমাপ্তি ঘোষণা করে। কার্গিলের বরফাবৃত উচ্চতায় প্রায় তিন মাস ধরে যুদ্ধের পর বিজয় ঘোষণা করে, যার মধ্যে টোলোলিং এবং টাইগার হিলের মতো অতি-উচ্চ স্থানগুলিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।১৯৯৯ সালের ২৬ জুলাই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে হটিয়ে কার্গিল চূড়ায় তেরঙ্গা উড়িয়েছিল ভারতীয় সামরিক বাহিনী। কিন্তু তার আগে বহু প্রাণের বলি দিতে হয়েছিল এ দেশকে। তাঁদের শ্রদ্ধা জানানো হয় এই কার্গিল বিজয় দিবসে। অত্যন্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬,৫০০ ফুট উচ্চতায় সংঘটিত এই যুদ্ধে ভারতীয় সেনারা অবিস্মরণীয় সাহসিকতা প্রদর্শন করেন। পাক সেনারা কাশ্মীর ও লাদাখের মধ্যে পরিবহন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার উদ্দেশ্যে কার্গিলের উচ্চভূমি দখল করেছিল। জবাবে ভারত শুরু করে 'অপারেশন বিজয়', যার মাধ্যমে শত্রুদের পরাস্ত করে ভারতীয় ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করা হয়। আজকের এই দিন শুধুমাত্র একটি 'বিজয়ের' বার্তা নয়, এক আত্মত্যাগের কাহিনি, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে পড়বে অনুপ্রেরণার বার্তা হয়ে।