মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে চর্চার মধ্যেই বুধবার ব্রিটেন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ব্রিটেন সফরের পর আগামী ২৫ জুলাই মলদ্বীপে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম সে দেশে যাচ্ছেন মোদী। ভারত এবং মলদ্বীপের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছে, ২৩ জুলাই থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত চার দিনে দুই দেশে সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের আমন্ত্রণে ২৩ জুলাই ব্রিটেন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।যেখানে তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। পাশাপাশি তিনি রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়াও ভারত এবং ব্রিটেনের বিশিষ্ট শিল্পপতিদের সঙ্গে কথা বলবেন।' এরপরেই দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তুলে ধরে বিদেশ সচিব বলেন, 'ভারত-ব্রিটেন অংশীদারিত্ব ২০২১ সালে কৌশলগত অংশীদারিত্বে উত্তীর্ণ হয় এবং তারপর থেকে নিয়মিত উভয় দেশের আদান-প্রদান প্রত্যক্ষ করা হচ্ছে। উভয় পক্ষই এই অংশীদারিত্বকে আরও মজবুত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কৌশলগত, অর্থনৈতিক, জ্বালানি এবং বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে এমন একাধিক প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার পাশাপাশি বিদেশমন্ত্রীদের স্তরে নিয়মিত যোগাযোগ হয়।'
আরও পড়ুন-৬২ বছর পর অবসর গ্রহণ ‘নায়ক’ মিগ-২১-র! ভারতীয় সেনা পেল ‘উড়ন্ত ট্যাঙ্ক’
সূত্রের খবর, এই সফরকালে প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারত-ব্রিটেন এফটিএ স্বাক্ষর করতে পারেন। যা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী অগ্রগতি। এই চুক্তি ব্রিটেনে বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ ভারতীয় পণ্যের উপর কর কমাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে হুইস্কি এবং গাড়ির মতো ব্রিটিশ পণ্য ভারতে বিক্রি করাও সহজ হবে।ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে গত তিন বছর ধরে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছিল। যার মূল লক্ষ্য ছিল দেশীয় বাজারে প্রবেশাধিকার অর্জনের পথ মসৃণ করা এবং উভয় দেশের জন্য বাণিজ্য সহজ ও উন্নত করা।
বিদেশ সচিব বলেন, প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী মোদী ২৫ জুলাই দুই দিনের সফরে মালদ্বীপ যাবেন।সূত্রের খবর, যেখানে তিনি ৬০তম জাতীয় দিবস উদযাপনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু প্রধানমন্ত্রীকে এই অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। মলদ্বীপের কিছু নেতার ‘ইন্ডিয়া আউট’ উস্কানি এবং মুইজ্জুর চিনপন্থী অবস্থানের কারণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি হওয়ার পর থেকে এটিই হবে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দেশ সফর। মুইজ্জু এখন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে চাইছেন।
আরও পড়ুন-৬২ বছর পর অবসর গ্রহণ ‘নায়ক’ মিগ-২১-র! ভারতীয় সেনা পেল ‘উড়ন্ত ট্যাঙ্ক’
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৫-১৬ জুন দুই দিনের সাইপ্রাস সফরে গিয়েছিলেন। যা গত দুই দশকে কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সফর। এটি মোদীর তিন দেশের সফরের অংশ ছিল, যার মধ্যে কানাডা (জি৭ শীর্ষ সম্মেলন) এবং ক্রোয়েশিয়াও ছিল। এই সফর এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল যখন পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা চরমে। 'অপারেশন সিঁদুর'-এর পরে সেটিই ছিল প্রধানমন্ত্রী প্রথম বিদেশ সফর।