'বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ভারতের অর্থনীতি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সাফল্য অর্জন করেছে।' মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'মৃত অর্থনীতি' মন্তব্যকে খণ্ডন করে দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।ভারতের অর্থনীতিকে বিপদে ফেলতে ৫০ শতাংশ শুল্কের বোঝা চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত ভারতও। দেশের অর্থনীতি যে সঠিক পথেই চলছে এবার সেই বার্তা দিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদী।
জাপান ও চিন সফর সেরে সোমবার দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপরেই মঙ্গলবার দিল্লির যশোভূমি কনভেনশন সেন্টারে ‘সেমিকন ইন্ডিয়া ২০২৫’ সম্মেলনের উদ্বোধন করে জিডিপি বৃদ্ধির সাম্প্রতিক তথ্য নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এই বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকের জিডিপি তথ্য আবারও প্রমাণ করেছে যে ভারত প্রত্যাশা ও পূর্বাভাসের অনেক ঊর্ধ্বে পারফর্ম করেছে। এখন আর কিছুই ভারতকে থামাতে পারবে না।ভারতের অর্থনীতি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সাফল্য অর্জন করেছে। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক স্বার্থপরতা যখন চরম আকার নিয়েছে। উদ্বেগ ও চ্যালেঞ্জ প্রবলভাবে বেড়েছে, ঠিক সেই সময় প্রথম ত্রৈমাসিকে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি পৌঁছে গিয়েছে ৭.৮ শতাংশে।' তিনি আরও বলেন, 'এই প্রবৃদ্ধি সামগ্রিক- কৃষি, শিল্প, ও পরিষেবা ক্ষেত্রে সমানভাবে ছড়িয়ে আছে। এটি আমাদের নাগরিকদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে এবং ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করার পথে এগিয়ে নিচ্ছে।'
আরও পড়ুন-প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্পে CBI তদন্ত! তেলাঙ্গানায় ফের প্রকাশ্যে দিদি ও ভাইয়ের দ্বন্দ্ব
এই প্রসঙ্গে মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'মৃত অর্থনীতি’ মন্তব্যকে একরকম খণ্ডন করেই প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'ট্রাম্প প্রশাসনের ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ, রাশিয়ার তেল আমদানি ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে-আমাদের উন্নয়নের গতি থামাতে পারেনি।' শুধু তাই নয়, আগামী দিনে ভারতের লক্ষ্যও স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'এই মুহূর্তে বিশ্বের অগ্রগতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিরল খনিজের লক্ষ্যে কাজ করছে ভারত। বিরল খনিজের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।' সেমিকন্ডাক্টর ক্ষেত্রে ভারতের অগ্রগতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আগের শতাব্দী গঠিত হয়েছে তেলের মাধ্যমে। কিন্তু ২১ শতকের শক্তি নিহিত একটি ক্ষুদ্র চিপে। এই চিপই আজকের ডিজিটাল হিরে। বিশ্ব এখন ভারতের উপর আস্থা রাখছে এই ক্ষেত্রে।' তিনি আরও জানান, ২০২১ সালে সেমিকন ইন্ডিয়া প্রোগ্রামের সূচনা হয়, ২০২৩ সালে প্রথম প্লান্ট অনুমোদন পায়, ২০২৪-এ আরও কয়েকটি, আর ২০২৫ সালে পাঁচটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এই খাতে মোট ১.৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ হচ্ছে, যার মাধ্যমে ভারত ‘ব্যাকএন্ড’ থেকে বেরিয়ে এসে একটি ‘ফুল-স্ট্যাক সেমিকন্ডাক্টর নেশন’-এ পরিণত হচ্ছে।
আরও পড়ুন-প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্পে CBI তদন্ত! তেলাঙ্গানায় ফের প্রকাশ্যে দিদি ও ভাইয়ের দ্বন্দ্ব
প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপান। পরে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখায় অতিরিক্ত আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামনে মাথানত না করে দেশের আর্থিক উন্নতিতে বিকল্প পথে হেঁটেছে ভারত।