বাজেট অধিবেশনের সূচনার আগে আজ সংসদভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সময়ই সব সাংসদদের প্রতি মোদী আবেদন করেন, সংসদ অধিবেশনে যাতে সব সাংসদরা আত্মবিশ্লেষণ করেন এবং আসল সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন। বিরোধীদের খোঁচা দিয়ে মোদী বলেন, 'সংসদ অধিবেশনকে পণ্ড করার অভ্যাস গড়ে তুলেছেন অনেকে। তাঁদের আত্মবিশ্লেষণ করা উচিত।' এদিকে আজকে নারীশক্তির প্রসঙ্গ টেনে এনে মোদী বলেন, 'রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু পথ দেখাবেন আর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বাজেট পেশ করবেন। এখানেই নারী শক্তির কতটা শক্তিশালী, তা দেখা গিয়েছে।' মোদী এরপর আরও বলেন, 'লোকসভা নির্বাচনের সময় এগিয়ে আসছে। তাই অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করা হয়। আমরাও সেই রীতি অনুসরণ করছি। ভোটের পর সরকার গঠন হলে আমরা পূর্ণাঙ্গ বাজেট নিয়ে আসব।' (আরও পড়ুন: সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল INDIA-র কাছে, তবে চণ্ডীগড়ে জয়ী BJP, কাঁদতে কাঁদতে আদালতে AAP)
প্রধানমন্ত্রী আজ বলেন, 'গত দশ বছরে কিছু মানুষ পার্লামেন্ট এমন ভাবে পরিচালনা করেছে যা তাদের উপযুক্ত মনে হয়েছে। কিছু সংসদ সদস্য সংসদের কার্যধারা ব্যাহত করা নিজেদের অভ্যাসে পরিণত করেছেন। তাদের আত্মবিশ্লেষণ করা উচিত। এই সংসদ সদস্যরা তাদের নির্বাচনী এলাকার লোকদের জিজ্ঞাসা করতে পারেন... কেউ কেউ এই এমপিদের নামও জানেন না এবং তারা কী করেছিলেন তা মনেও করতে পারেন না। যে সব সাংসদরা সংসদে ঝামেলা বাঁধিয়েছিলেন, তাঁদের কেউ মনে রাখবে না। তাঁরা অভ্যাসবশত গণতান্ত্রিক মূল্য়বোধকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছেন। তাঁরা এবার নিজেদের দিকে তাকান ৷ ভাবুন, সাংসদ থাকাকালীন তাঁরা কী করেছেন। যাঁরা ভালো কাজ করেছেন, তাঁদের সবাই মনে রাখবে। কিন্তু যাঁরা কাজে ব্যাঘাত ঘটিয়েছেন, তাঁদের কেউ মনে রাখবে না। এই বাজেট অধিবেশন সেই সব সাংসদদের কাছে অনুশোচনার সুযোগ এনে দিয়েছে। এবার তাঁরা তাঁদের সবচেয়ে ভালোটা করে দেখাক।'
এর আগে গত শীতকালীন অধিবেশনে প্রায় ১৫০ জন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল উভয় কক্ষে। তবে বাজেট অধিবেশনের আগে তাঁদের সাসপেনশন প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন লোকসভায় দর্শক গ্যালারি থেকে ঝাঁপ দিয়ে স্পোক বম্ব ফাটিয়েছিলেন একজন। লোকসভায় কীভাবে এই ধরনের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে সরব হয়েছিলেন বিরোধী সাংসদরা। তাতেই উত্তাল হয় সংসদের উভয় কক্ষ। পরপর বিরোধী সাংসদরা সাসপেন্ড হন এই ঘটনায়। সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের মধ্যে ছিলেন কংগ্রেসের শশী থারুর, কার্তি চিদাম্বরম, মণীশ তিওয়ারি, এনসিপির সুপ্রিয়া সুলে, সমাজবাদী পার্টির ডিম্পল যাদব, ন্যাশনাল কনফারেন্সের ফারুক আবদুল্লার মতো তাবড় নেতারা। এর আগেও চিনা আগ্রাসন, কৃষক আন্দোলন, পেগাসাসের মতো একাধিক ইস্যুতে সংসদভবন বারবার উত্তাল হয়েছে। বিরোধীরা ওয়েলে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এবং প্রায় প্রতি অধিবেশনের আগেই প্রধানমন্ত্রী মোদী বিরোধীদের সংসদে মসৃণ ভাবে কাজ করতে দেওয়ার আহ্বান জানান। তবে চলতি সংসদের এটাই শেষ অধিবেশন হতে চলেছে। এই আবহে বাজেট অধিবেশনে বিরোধীরা কোন ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগবে, সেদিকে নজর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।