২০২৩ সালের পর ২০২৫। আবারও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জয়জয়াকার রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি)। চারটির মধ্যে তিনটিতে জয় পেয়েছে এবিভিপি। এরমধ্যে সভাপতির পদটি কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়ার (এনএসইউআই) কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে এবিভিপি। কংগ্রেস জিতেছে মাত্র একটিতে। অন্যদিকে, সভাপতির দৌড়ে থাকা এবিভিপির আরিয়ান মান কংগ্রেসের এনএসইউআই-এর প্রার্থী জোসলিন নন্দিতা চৌধরীকে পরাজিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছিল দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের ভোট। ৫০টি কলেজের আড়াই লক্ষেরও বেশি ছাত্রছাত্রী ভোট দিয়েছেন। ৫২টি কেন্দ্রে বুথ ছিল ১৯৫টি। ভোটগ্রহণ হয়েছে ৭১১টি ইভিএমে। ছাত্র সংগঠনের ৪টি প্রধান পদের জন্য ভোটের ময়দানে নেমেছিলেন ২১ জন প্রার্থী। এরমধ্যে ৯ জন সভাপতি পদের জন্য লড়াই করছিলেন।ইভিএমের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন প্রায় ২.৭৫ লক্ষ পড়ুয়া। এবারের নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৩৯.৪৫ শতাংশ। শুক্রবার ফলপ্রকাশের পর দেখা গেল এবিভিপির দাপট।এবিভিপির আরিয়ান মান ২৮,৮৪১ ভোট পেয়ে সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন।যেখানে এনএসইউআই-এর জোসলিন চৌধুরী ১২,৬৪৫ ভোট পেয়েছেন। তবে সভাপতির পদে আরিয়ান মান জিতলেও সহ-সভাপতি পদে জিতছেন এনএসইউআইয়ের রাহুল ঝাঁসলা। সহ-সভাপতির পদটিতে এবিভিপি-র প্রার্থী গোবিন্দ তানওয়ারকে ৮ হাজার ৭৯২ ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেস সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের রাহুল ৷ তিনি পেয়েছেন ২৯ হাজার ৩৩৯ টি ভোট এবং গোবিন্দের ঝুলিতে পড়েছে ২০ হাজার ৫৪৭ টি ভোট। আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের কুণাল চৌধরী এনএসইউআই-এর কবীরকে পরাজিত করে সম্পাদকের পদটি ছিনিয়ে নিয়েছেন। সেন্ট্রাল প্যানেলের যুগ্ম সম্পাদকের পদটিও পেয়েছেন এবিভিপি'র দীপিকা ঝা। তিনি এনএসইউআই-এর লবকুশ ভাডানাকে পরাজিত করেছেন।
আরিয়ান মান কে?
সদ্য বিজয়ী দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আরিয়ান মান হরিয়ানার বাহাদুরগড়ের বাসিন্দা। হংসরাজ কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করে বর্তমানে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে এমএ করছেন। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে তিনি এবিভিপির নেতৃত্বাধীন ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এসেছেন। যার মধ্যে ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রচার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে তিনি সরাসরি অংশ্রহণ করেছিলেন। পড়াশুনো এবং রাজনীতির পাশাপাশি আরিয়ান মান একজন উৎসাহী ফুটবল খেলোয়াড়ও। ছাত্র কল্যাণ এবং ক্যাম্পাস উন্নয়নকেই মূল উদ্দেশ্য করে নির্বাচনী প্রচারে নেমেছিলেন আরিয়ান মান। ভর্তুকিযুক্ত মেট্রো পাস, বিনামূল্যে ওয়াই-ফাই, অ্যাক্সেসিবিলিটি অডিট, উন্নত ক্রীড়া সুবিধা এবং পিএইচডি গবেষদের আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। যদিও, কোন রকম বিজয় মিছিল করা যাবে না বলে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দিল্লি হাইকোর্ট। কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে দিল্লি পুলিশ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ-সহ স্থানীয় প্রশাসনের কাছেও এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।