সম্প্রতি পাকিস্তানের মুখোশ টেনে খুলে দিয়েছিল জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের (জেইএম) এক কমান্ডার। এবার আরও একধাপ এগিয়ে ইসলামাবাদের পর্দা ফাঁস করে দিল লস্কর-ই-তৈবার এক শীর্ষ নেতা। একটি ভিডিও বার্তায় ৭ মে ভারতের অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তানের পাঞ্জাব অঞ্চলের মুরিদকের মরকজ তৈবা জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে যাওয়ায় কথা স্বীকার করে নিয়েছে লস্কর কমান্ডার কাসিম।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি ভিডিওয় জঙ্গি নেতা কাসিমকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ গুঁড়িয়ে যাওয়া মুরিদকে ঘাঁটি নতুন করে, আরও বড় মাপের করে গড়ে তোলা হচ্ছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মুরিদকের ধ্বংসস্তূপে পরিণত ক্যাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে কাসিম বলছে, 'আমি এই মুহূর্তে মরকজ তৈবা সামনে দাঁড়িয়ে আছি। (অপারেশন সিঁদুর) হামলায় এটিকে ধ্বংস করা হয়েছে। কিন্তু আমরা এটিকে আরও বড় করে পুনর্নির্মাণ করব।' সেইসঙ্গে ওই ক্যাম্প মুজাহিদিন এবং তালাবার বহু সাহসী যোদ্ধার জন্ম দিয়েছে এবং তাঁরা জয় হাসিল করেছে বলেও উল্লেখ করেছে কাসিম।ওই জঙ্গি কমান্ডারেরই আরও একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে ওই জঙ্গি পাকিস্তানের তরুণদের মরকজ তৈবায় যোগ দিতে আহ্বান করেছে। যদিও ওই ভিডিওগুলির সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা। লস্কর কমান্ডারের এটি ‘ ফাঁপা হুমকি’ হলেও বিশ্বের কূটনীতিতে ভারতের এটি বড় জয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন-'হাফিজ সইদের সঙ্গে দেখা...,' দু’দশক পর মনমোহন সিংকে নিয়ে বিস্ফোরক দাবি ইয়াসিন মালিকের
সম্প্রতি এ নিয়ে প্রথম বার মুখ খুলেছিল নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। জইশের শীর্ষ কমান্ডার মাসুদ ইলিয়াস কাশ্মীরির একটি বক্তৃতায় বলেছিল, কী ভাবে ভারতীয় সেনার অভিযান জইশ নেতা মাসুদ আজহারের পরিবারকে তছনছ করে দিয়েছিল।ভাইরাল ক্লিপে কাশ্মীরি উর্দুতে মাসুদ ইলিয়াস বলেছে, 'আমরা এই দেশের সীমান্ত রক্ষার জন্য দিল্লি, কাবুল এবং কান্দাহারের সঙ্গে লড়াই করেছি। সবকিছু ত্যাগ করার পর, ৭ মে, বাহাওয়ালপুরে ভারতীয় বাহিনী মৌলানা মাসুদ আজহারের পরিবারকে টুকরো টুকরো করে ফেলেছিল।' যদিও ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।
আরও পড়ুন-'হাফিজ সইদের সঙ্গে দেখা...,' দু’দশক পর মনমোহন সিংকে নিয়ে বিস্ফোরক দাবি ইয়াসিন মালিকের
বার্তা সংবাদ এএনআই-র তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সালে নির্মিত মুরিদকের মরকজ তৈবা লস্কর-ই-তৈবার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিল। ভারত বিরোধী সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে এই ক্যাম্প থেকে ট্রেনিং-প্রাপ্ত বহু জঙ্গি যুক্ত ছিল। অন্যদিকে, ২০১৫ সালে নির্মিত বাহওয়ালপুরের ট্রেনিং ক্যাম্পটি জইশ জঙ্গিদের অন্যতম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিল। ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামা হামলার ছক ওই ক্যাম্পে বসেই করা হয়েছিল। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হানায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর ৭ মে 'অপারেশন সিঁদুরে' আরও ৭ টি জঙ্গি ঘাঁটি ও ক্যাম্প-সহ এই দুটি উল্লেখযোগ্য ক্যাম্পও গুড়িয়ে দেয় করে দেয় ভারতীয় সেনা।সেই আক্রমণে রাতভর বিমান হামলা চলেছিল। সেনাবাহিনী অত্যন্ত নির্ভুলভাবে ধ্বংস করে আসে জঙ্গি ঘাঁটি। চলে সামরিক অভিযান। পাকিস্তান পরে স্বীকার করেছে যে, এই হামলায় তাদের নয়'টি স্থানে আঘাত করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বাহাওয়ালপুর, কোটলি এবং মুরিদকে। এগুলি সবকটাই উগ্রপন্থী কার্যকলাপের পরিচিত কেন্দ্রস্থল।