আবারও কী আফগানিস্তানে মোতায়েন হতে চলেছে মার্কিন সেনা? বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যে এমনই প্রশ্ন উঠছে বিশ্বজুড়ে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক বাগাম বিমানঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে মার্কিন সেনা। কিন্তু কেন এই পরিকল্পনা? ট্রাম্পের দাবি, চিন যেখানে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে সেখান থেকে বাগাম বিমানঘাঁটি খুব কাছেই।আফগানিস্তান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেনা সরিয়েছে চার বছর আগে। সে সময়ে ওই বিমানঘাঁটিরও দখল ছেড়েছিল মার্কিন সেনা।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা বাগাম ঘাঁটিটি ফেরত চাই।কারণ তাদের আমাদের কাছ থেকে কিছু প্রয়োজন। আমরা সেই ঘাঁটিটি ফিরে পেতে চাই। এটি একটি ছোট ব্রেকিং নিউজ হতে পারে। এর ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত কৌশলগত-এটি চিনের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির স্থানের কাছ থেকে মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে।’ ট্রাম্প আরও বলেন, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র 'বিনামূল্যে' তালিবানকে বিমানঘাঁটি দিয়েছিল, এটি সঠিক নয়। তিনি জানান, 'আমরা আফগানিস্তান ত্যাগ করতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু আমরা শক্তি ও মর্যাদার সঙ্গে এটি ত্যাগ করতে পারতাম, এবং আমরা বিশ্বের বৃহত্তম বিমান ঘাঁটিগুলির মধ্যে অন্যতম বাগাম বিমান ঘাঁটি ধরে রাখতে পারতাম। অথচ আমরা এটি তাদের (তালিবানকে) বিনামূল্যে দিয়েছিলাম। আমরা এটি পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছি।' ট্রাম্প দাবি করেছেন, বিমানঘাঁটি পুনরুদ্ধারের জন্য আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণকারী তালিবানদের উপর মার্কিন প্রশাসনকে ব্যবহার করতে পারেন তিনি।
আরও পড়ুন-কেরলজুড়ে হুলুস্থূল! কিশোরকে বারংবার যৌন হেনস্থা, পুলিশের জালে রাজনীতিক-সহ ৯
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আগেও পানামা খাল থেকে গ্রিনল্যান্ড পর্যন্ত নানা ভূখণ্ড অধিগ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। বাগামেরর প্রতিও তিনি বহু বছর ধরে আগ্রহ দেখিয়ে আসছেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, কোন না কোনভাবে তালিবানের সম্মতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হয়তো আবার বিমানঘাঁটিটি দখল করতে পারে। তবে এই সমঝোতার ধরন কী হবে, তা স্পষ্ট নয়। এ রকম হলে তা হবে বড় ধরনের মোড় পরিবর্তন, কারণ তালিবানই একসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দেশ থেকে বের করে দিয়ে মার্কিন-সমর্থিত সরকারকে উৎখাত করেছিল। কিন্তু মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ঘাঁটি আবার দখল করতে গেলে বড় ধরনের সামরিক প্রস্তুতি লাগবে। তাঁদের মতে, অন্তত ১০ হাজার সেনা ও উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দরকার। এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমি কোন উপায় দেখছি না যে, এটা বাস্তবে কীভাবে সম্ভব হবে।’
আরও পড়ুন-কেরলজুড়ে হুলুস্থূল! কিশোরকে বারংবার যৌন হেনস্থা, পুলিশের জালে রাজনীতিক-সহ ৯
সোভিয়েত আমলে নির্মিত এই ঘাঁটিটি ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর আফগানিস্তানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান ঘাঁটি ছিল। তবে ২০২১ সালে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহারের পর তালিবানরা এর নিয়ন্ত্রণ নেয়।ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে ব্যাপক সামরিক অভিযান চালায় এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তালিবান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এর ২০ বছর পর ২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনী দেশটি থেকে সরে দাঁড়ায়। দীর্ঘ এই যুদ্ধে মার্কিন সেনাদের প্রায় ২ হাজার ৫০০ জন নিহত হন। সেনা প্রত্যাহারের পরপরই তালিবানরা ফের আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়।