গত জুন মাসে আমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১ ভেঙে পড়ে ২৬০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। মার্কিন আদালতে বিমান প্রস্তুতকারক সংস্থা বোয়িং এবং যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারক হানিওয়েলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলেন নিহত যাত্রীদের পরিবার-পরিজনরা। তাঁদের দাবি, দুই সংস্থার গাফিলতির জেরেই বিমানটি ভেঙে পড়ে।
মঙ্গলবার ডেলাওয়্যার সুপিরিয়র কোর্টে দাখিল হওয়া মামলায় বলা হয়েছে, বিমান নির্মাণকারী সংস্থা বোয়িং-এর গাফিলতি ছিলই। বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানে যে সুইচ লাগানো ছিল, সমস্যা ছিল তাতেও। হয় অসাবধনতাবশত লক হয়ে যায় সুইচ, অথবা ছিলই না, যার দরুণ জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মাটি ছেড়ে ওড়ার মতো শক্তি পাওয়া যায়নি। বোয়িং এবং যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারক হানিওয়েল এই ঝুঁকির কথা জানত। ২০১৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেজারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনও বোয়িং-এর বিমানের লকিং মেকানিজম নিয়ে সতর্ক করেছিল। নিহতদের পরিবারের দাবি, থ্রাস্ট লিভারের একেবারে পিছনে সুইচ বসানো ছিল। এর ফলে ককপিটে কোনও অসাবধানতাবশত কিছু ঘটে থাকলে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। মামলাকারীদের প্রশ্ন, 'এই বিপর্যয় ঘটারই ছিল। কিন্তু তা এড়াতে বোয়িং এবং হানিওয়েল কী করেছে? কিচ্ছুটি না।'
আরও পড়ুন-‘জিরো ট্যালেন্ট!’ চার্লি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, ট্রাম্পের হুমকিতে বন্ধ ‘জিমি কিমেল শো’
ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনে বোয়িং-এর সদর দফতর।হানিওয়েল-এর নর্থ ক্যারোলাইনায়। এখনও পর্যন্ত তাদের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে এই প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনও মামলা দায়ের হল। বিমানে দুর্ঘটনায় নিহত কান্তাবেন দীরুভাই পাঘাদল, নব্যা চিরাগ পাঘাদল, কুবেরভাই প্যাটেল এবং বাবিবেন প্যাটেলের পরিবার মামলা করেছেন। ২২৯ যাত্রী, ১২ জন ক্রু ও যে হস্টেলে বিমান ভেঙে পড়ে সেখানের ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল দুর্ঘটনায়। কেবল একজন যাত্রী প্রাণে বেঁচে যান।মামলাকারীরা হয় ভারত, অথবা ব্রিটেনের নাগরিক বলে জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে, ভারত, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত সংস্থাগুলি এখনও দুর্ঘটনার কারণ সম্পূর্ণ নিশ্চিত করতে পারেনি। ভারতের এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর প্রাথমিক রিপোর্টে ককপিটে বিভ্রান্তির কথা উঠে এসেছে। তবে এফএএ প্রধান ব্রায়ান বেডফোর্ড জুলাই মাসে বলেছিলেন, ফুয়েল কন্ট্রোল সিস্টেমের যান্ত্রিক ত্রুটি বা ভুলবশত পরিচালনা দুর্ঘটনার কারণ বলে মনে হয় না।
আরও পড়ুন-‘জিরো ট্যালেন্ট!’ চার্লি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, ট্রাম্পের হুমকিতে বন্ধ ‘জিমি কিমেল শো’
উল্লেখ্য, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের দুটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর বোয়িংকে আইনি লড়াই ও ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি খরচ করতে হয়েছিল। এবার এই ঘটনাতেও বড়সড় আর্থিক ধাক্কা সামলাতে হবে সংস্থাকে।