তালিবানের হামলায় ফের রক্তে ভিজল পাকিস্তানের মাটি। পাকিস্তানের সেনা কনভয়ে অতর্কিত হামলায় মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১২ জন জওয়ানের। ইতিমধ্যে এই হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান(টিটিপি)।
সূত্রের খবর, শনিবার আফগান সীমান্তবর্তী উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে এই হামলা চালানো হয়েছে। এদিন ভোর ৪টে নাগাদ ফকির সরাই এলাকা দিয়ে পাক সেনার কনভয় যাওয়ার সময় অতর্কিতে হামলা চালায় টিটিপি। স্থানীয় একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, 'সশস্ত্র ব্যক্তিরা ভারী অস্ত্র নিয়ে গুলি চালায়।' আক্রমণকারীরা কনভয় থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুই পক্ষের তীব্র গুলির লড়াইয়ের পর ১৩ জঙ্গি ও ১২ জন সেনা নিহত হয়েছে। আরও চার জন আহত হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) সোশ্যাল মিডিয়ায় এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। টিটিপি পাকিস্তানি তালিবান নামেও পরিচিত। এই গোষ্ঠীটি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ঘন ঘন হামলা চালিয়ে আসছে, যেখানে ২০১৪ সালের সামরিক অভিযানের আগে তারা এক সময় বিশাল অঞ্চল দখল করেছিল।
আরও পড়ুন-লাদেনের কথা ভুলে গেলেন? বিশ্ব মঞ্চে পাকিস্তানকে গিলে খেল ভারত ও আমেরিকার ‘বন্ধু’
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে কয়েক মাসের মধ্যে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার মধ্যে একটি। গত জুন মাসে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় একটি ফিঁদায়ে জঙ্গি হামলা হয়। সেখানে মৃত্যু হয় ১৬ জন জওয়ানের। ২০১৪ সালে শুরু হওয়া সামরিক অভিযানের মাধ্যমে টিটিপি এক সময় এই অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করত। পাকিস্তান সরকার বারবার প্রতিবেশী আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সীমান্ত পার করে আক্রমণ চালানো জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করেছে। যদিও কাবুল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তথ্য বলছে, চলতি বছরের শুরু থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির হামলায় প্রায় ৪৬০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।
আরও পড়ুন-মাথার দাম ছিল ১ কোটি! চার দশকের সশস্ত্র লড়াইয়ে ক্লান্ত, আত্মসমর্পণ কিষেণজির স্ত্রী সুজাতার
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানের মাথাব্যাথার অন্যতম বড় কারণ আফগানিস্তানের মদতপুষ্ট টিটিপি। খাইবার পাখতুনখোয়া, বালুচিস্তান-সহ পাক-আফগান সীমান্ত এই জঙ্গিদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সেখান থেকে প্রায়শই পাক সেনাবাহিনীর উপর চলে হামলা। এদিকে, এই অঞ্চলগুলির মধ্যে দিয়ে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর বা সিপিইসি গিয়েছে। সেখানেও চিনা আধিকারিকদের উপর বহুবার হামলা চালিয়েছে এই জঙ্গিরা।