ইন্দোরের ব্যবসায়ী রাজা রঘুবংশী হত্যা মামলার রহস্য এখনও পুরোপুরি কাটেনি। এখনও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে।এই আবহে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে জবানবন্দি দিতে অস্বীকার করেছে মেঘালয় হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত তিন জন খুনির মধ্যে দু জন।তবে এর আগে পুলিশের জেরায় নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছিল তারা। এমনটাই দাবি করেছে পুলিশ। (আরও পড়ুন: ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ-পাক-চিন, কী ছক কষছে ৩ দেশ? 'জোট' নিয়ে যা বলল ভারত)
আরও পড়ুন: নিজেদের দোষ ঢাকতে আজব দাবি, চোখ বন্ধ করলেই মনে হয় 'র' দেখতে পায় বাংলাদেশিরা
শিলং সিটির পুলিশ সুপার তথা বিশেষ তদন্তকারী দলের প্রধান হার্বার্ট পিনিয়াইড খারকোঙ্গর জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাজা খুনে অভিযুক্ত দুই ভাড়াটে খুনি আকাশ রাজপুত এবং আনন্দ কুর্মিকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করানো হয়। কিন্তু সেখানে বয়ান দিতে অস্বীকার করে তারা। তাঁর কথায়, 'সোনম, রাজ-সহ পাঁচ অভিযুক্তের মধ্যে দু জনকে বৃহস্পতিবার ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে পেশ করা হয়। কিন্তু তাঁরা বয়ান দিতে অস্বীকার করে।' যদিও পুলিশকর্তার দাবি, ধৃতদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই পুলিশের কাছে যথেষ্ট জোরাল তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। পাশাপাশি ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্টের জন্যও অপেক্ষা করছে পুলিশ।এর আগে মেঘালয় পুলিশ দাবি করেছিল, সোনম, রাজ-সহ পাঁচ অভিযুক্তই নিজেদের অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছে। হার্বার্ট পিনিয়াইড খারকোঙ্গর বলেন, ‘অভিযুক্তদের বয়ান দেওয়ার জন্য জোর করা যায় না। এটা তাদের উপরে নির্ভর করে। কিন্তু তথ্যপ্রমাণও অভিযোগ প্রমাণে সমান গুরুত্বপূর্ণ। ফলে কোনও সমস্যা নেই। এই মামলায় আমাদের হাতে প্রমাণ রয়েছে।’ (আরও পড়ুন: কট্টরপন্থীদের মন পেতে ঢাকায় মন্দির ভাঙল ইউনুসের সরকার, কী বলছে ভারত?)
আরও পড়ুন: কার্তিক মহারাজের নামে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের, কী দাবি অভিযোগকারীর?
ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৮০ ধারায় পুলিশ অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তি আদায় করতে পারে। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ১৮৩ ধারায় রেকর্ড করা জবানবন্দিই অভিযোগ প্রমাণের ক্ষেত্রে আদালতগ্রাহ্য বলে গণ্য করা হয়।আনন্দ এবং আকাশ ছাড়াও বিশাল সিং চৌহান নামে আরও একজন খুনিকে রাজাকে হত্যার জন্য ভাড়া করেছিল সোনম এবং তার প্রেমিক রাজ কুশাওয়া।দু’দিন আগেই ইন্দোর থেকে মেঘালয়ে ফিরেছে এই মামলার তদন্তকারী দল। রাজাকে খুনের পর সেখানে একটি ফ্ল্যাটে উঠেছিল সোনম। সেই ফ্ল্যাটের মালিক, আবাসনের এক রক্ষী এবং জমি বাড়ির এক ব্যবসায়ীকে সোমনদের সহযোগিতা এবং তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২৩ মে মেঘালয়ে হনিমুনে নিয়ে গিয়ে রাজাকে খুন করে নববধূ সোনম। বেশ কয়েকদিন পরে রাজার দেহ উদ্ধার হয়। তারপরই ফাঁস হয়ে যায় সোনম এবং তার প্রেমিক রাজের ভয়ানক ষড়যন্ত্র। (আরও পড়ুন: ভারতকে এস৪০০-এর বাকি দুই স্কোয়াড্রন কবে দেবে রাশিয়া? এল বড় আপডেট)
ঘটনার বিবরণ
গত ২০ মে মধুচন্দ্রিমায় মেঘালয়ে ঘুরতে যান নবদম্পতি রাজা রঘুবংশী ও সোনম রঘুবংশী। ২৩ মে চেরাপুঞ্জিতে পৌঁছনোর পর নিখোঁজ হয়ে যান তাঁরা। এই ঘটনার ১১ দিন পর খাদ থেকে উদ্ধার হয় রাজার দেহ। তবে খোঁজ মেলেনি সোনমের। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে খোঁজাখুঁজির পর, সোনমকে মেঘালয় থেকে ১,২০০ কিলোমিটার দূরে উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরের একটি ‘ধাবা’ থেকে পাওয়া যায়। সেখান থেকে বাড়িতে ফোন করেন সোনম। সেই ফোনের সূত্র ধরে তাঁকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। তদন্তে জানা গেছে, সোনমের প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। এছাড়া এই হত্যায় সাহায্য করার জন্য আকাশ রাজপুত, বিশাল সিং চৌহান এবং আনন্দ কুর্মি নামে আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।