সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ প্রতি বছর পালন করা হয় জাতীয় পুষ্টি দিবস হিসেবে। ভারতে মূলত শিশুদের মধ্যে পুষ্টির অভাব ভীষণভাবে প্রকট। কখনও কম খাওয়া, কখনও আবার বেশি কিন্তু অপুষ্টিকর খাবার খাওয়ার জেরেই নানা সমস্যা দেখা দেয় শরীরে। সম্প্রতি এই বিষয়ে বিস্তারিত কথা বললেন ফোর্টিস হাসপাতালের চিফ ডায়েটিশিয়ান শ্রাবণী মুখোপাধ্যায়।
ডায়েটিশিয়ানের মতে, ‘বয়ঃসন্ধিকাল একটি শিশুর বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। ভারতের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে পুষ্টির অভাব এখনও একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। জাতীয় স্বাস্থ্য সমীক্ষা অনুসারে, কিশোর-কিশোরীদের একটি বড় অংশ অপুষ্টি, রক্তাল্পতা, ভিটামিনের অভাব এবং অপুষ্টির মতো সমস্যায় ভোগে। এর ফলে কিছু কিশোর-কিশোরী যেমন কম ওজনের সমস্যায় ভোগে, তেমনি অন্যদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ওজন বৃদ্ধি এবং স্থূলতার সমস্যা দেখা দেয়। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, পুষ্টির অভাব, এবং পুষ্টিহীন খাবারের কারণে সমস্যাটি গুরুতর হচ্ছে।’
আরও পড়ুুন - বেআইনিভাবে গাছ কাটার জেরেই বন্যা? কেন্দ্রকে জবাবদিহির নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
সুস্বাদু হলেও যেসব কারণে ক্ষতিকর
শ্রাবণীর কথায়, ‘কিশোর-কিশোরীদের প্রায়শই স্ন্যাকস, প্যাকেটজাত ফাস্ট ফুড এবং মিষ্টি পানীয়ের দিকে ঝোঁক বেশি। নুন, চিনি এবং অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটে ভরা এসব খাবার সুস্বাদু এবং সুবিধাজনক হতে পারে। কিন্তু আয়রন, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিনের মতো পুষ্টি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ধরনের খাদ্যাভ্যাস রক্তাল্পতা, দুর্বলতা বৃদ্ধি, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং এমনকি ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্থূলতার মতো সমস্যার কারণ হয়।’
আরও পড়ুুন - গুজরাটের ইলিশে সাধ মিটছে বাংলার, স্বাদেও নাকি অতুলনীয়! কত দামে বিকোচ্ছে?
কোন পথে সমাধান?
ডায়েটিশিয়ানের কথায়, ‘স্কুল, কলেজে সচেতনতা অভিযান চালালে শিশু ও তরুণরা খাবারের অভ্যাস সম্পর্কে সচেতন হতে শিখবে। এছাড়াও পুষ্টিকর খাবারগুলি যত সহজলভ্য ও সুস্বাদু হবে, ততই শিশুরা এসব খাবার খাবে বেশি। এর ফলে নিজে থেকেই ওই ধরনের খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলবে। পাশাপাশি সরকার ও প্রশাসনকেও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এই ধরনের খাবারের বিজ্ঞাপন কম দেওয়া থেকে অতিরিক্ত কর প্রয়োগের মাধ্যমে এর চাহিদা কমানো যেতে পারে।’ প্রসঙ্গত, ভারত সরকার ইতিমধ্যেই জিএসটি হার বাড়িয়ে এই ধরনের খাবার কেনার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করার উদ্যোগ নিয়েছে।