বিষবৃক্ষ উপন্যাস এই বাড়িতে বসেই শিখেছিলেন সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। আবার সুভাষচন্দ্র বসু বেশ কয়েকটি রাজনৈইতক সভাও করেছিলেন এই বাড়ির সামনের মাঠে। দত্তবাড়ির উল্লেখ যেমন পাওয়া যায় বঙ্কিমের উপন্যাসে, তেমনই তারা উল্লেখ্য স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসেও। সাড়ে তিনশো বছর আগে এই বাড়িতে শুরু হওয়া দুর্গাপুজো তাই আজও অমলিন।
আরও পড়ুন - মহালয়ার আগেই লাকি ৪ রাশি, মিটবে ঘরোয়া বিবাদ, হাতে আসবে পাওনা টাকা! অফিসেও সুখবর
৩৫০ বছর আগে শুরু পুজো
কলকাতাল জমিদার রামচদ্র দত্ত ১৬৭৫ সালে সুন্দরবনের কাছে জয়নগরে এসে নিজের জমিদারি স্থাপন করেন। তখন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার অধিকাংশই ছিল সুন্দরবনের অংশ। বাদাবনে থাকাকালীন একদিন স্বয়ং মা দুর্গার স
স্বপ্নাদেশ আসে। তার পর থেকেই এই অঞ্চলে পুজো শুরু করেন রামচন্দ্র দত্ত। এই পুজোয় ব্রাহ্মণরা পুজো শুরু করেন বন্দুক থেকে গুলি ছুঁড়ে। মহালয়ার পর দিনই হয় বোধন। দশদিন ধরে এখানে উদযাপিত হয় দুর্গাপুজো। বর্তমানে গুলি না ছুঁড়লেও আতসবাজি ফাটিয়ে পুজো শুরু করা হয়। বলি প্রথা এখনও রয়েছে এই পুজোয়। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে মাতৃশক্তির আরাধনা করা হয়। রথযাত্রার দিন এই বাড়ির পুজোর কাঠামো তৈরি শুরু হয়। বংশপরম্পরাতে কুমোর, ঢাকি ও পুরোহিতরা এই বাড়ির পুজোয় যোগ দিয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন - পিতৃপক্ষে কিছু কিনলে কি অশুভ নজর লাগে? কী হয় এই ১৬ দিনে?
আসতেন বঙ্কিম ও সুভাষ
প্রসঙ্গত, বারুইপুরের ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালীন এই বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি ছিলেন এই বাড়ির পূর্বপুরুষ যোগেন্দ্র কিশোর দত্তের বন্ধু। এই বাড়িতে বহুদিন কাটিয়েছেনও সেই সুবাদে। বঙ্কিমের একাধিক লেখাতেও দত্তবাড়ির উল্লেখ পাওয়া যায় সেই সূত্রেই। অন্যদিকে সুভাষচন্দ্র বসুও ছিলেন এই বাড়ির নিয়মিত অতিথি। এখনও সুভাষচন্দ্র বসুর বাড়িতে এই বাড়ি থেকে পুজোর প্রসাদ পাঠানো হয়। পরিবার সূত্রে জানা যায়, সুভাষ ছিলেন ওই বাড়ির বংশধর শিবেন্দ্রনারায়ণ দত্তের ছোট ঠাকুমার দাদা। স্বাধীনতা আন্দোলনের বেশ কয়েকটি সভা এই বাড়ির সামনের মাঠে আয়োজিত হয়েছিল সেই সুবাদেই।