ছোট পর্দার জনপ্রিয় মুখ সুস্মিতা রায়। তাঁর স্বামী সব্যসাচী চক্রবর্তী পেশায় একজন সাংবাদিক। তবে এছাড়াও সব্যসাচীর আরও একটা পরিচয় হল তিনি জনপ্রিয় অভিনেতা সায়ক চক্রবর্তীর দাদা। তবে এবার খবর বিচ্ছেদের পথে হাঁটতে চলেছেন তাঁরা, অর্থাৎ সায়কের ‘কুটনি বৌদি’ ও ‘মোটা দাদা’।
মঙ্গলবার সুস্মিতার জন্মদিন। আর জন্মদিনের দিনই তিনি সমাজমাধ্যমের পাতায় সব্যসাচীর পোস্টের স্ক্রিনশট পোস্ট করে তাঁদের বিচ্ছেদের খবর ভাগ করে নিলেন অনুরাগীদের সঙ্গে।
সুস্মিতা ও সায়ক অভিনয়ের পাশাপাশি তাঁদের জীবনের রোজনামচার খুঁটিনাটি ভ্লগের মাধ্যমে অনুরাগীদের সামনে তুলে ধরেন। তা তাছাড়াও তাঁদের দু'জনকেই দু'জনের ভ্লগে একটা সময় দেখা যেত খুব ঘন ঘন। আর তা হওয়ায়ও খুব স্বাভাবিক। কারণ এক পরিবারের সদস্য তাঁরা। কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরেই সায়কের ভ্লগে সুস্মিতার দেখা মেলেনি। অন্যদিকে, সুস্মিতার ভ্লগ থেকে কেবলই তাঁর ব্যবসা সংক্রান্ত নানা ভিডিয়ো আসতে থেকেছে। তবে তাঁদের এই আলাদা আলাদা ভাব ভক্তদের চোখ এড়ায়নি। তা নিয়ে অবশ্য অনুরাগীরা বার বার প্রশ্ন তুলেছেন। জানতে চেয়েছিলেন ‘কুটনি বৌদি’ কোথায়? কিন্তু কোনও উত্তর আসেনি সায়ক বা সুস্মিতার পক্ষ থেকে। অবশেষে সুস্মিতার জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে সমাজমাধ্যমের পাতায় তাঁদের বিচ্ছেদের খবর সব্যসাচী সবার প্রথম সামনে আনেন।
প্রথমে সব্যসাচী তাঁদের বিচ্ছেদের খবর স্যোশাল মিডিয়ায় জানিয়ে, সুস্মিতার একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘ভালো থাক। বড় হ আরও। জন্মদিনে, আমার শেষতম শুভেচ্ছায় অনেক ভালো থাকিস। নতুন অধ্যায় ভালো হোক। আমরা আলাদা হচ্ছি। কিছু জিনিস দু’ তরফে মিলল না, মন খারাপ দু' তরফেই । সেটা কাটিয়েই এগিয়ে যাওয়া হোক! বাকিদের চর্চা, আলোচনা দয়া করে এখানেই শেষ হোক। আপনাদের কাছ থেকে দু তরফেই গলাগলি আশা করছি, গালাগালি নয় । এরপর আপনাদের যা ইচ্ছে । এই পোস্ট দু' তরফের সম্মতিক্রমে, আলোচনা করে। আপনারা এবার প্লিজ আলোচনা থামিয়ে দিন । আমাদের দু' জনেরই আলাদা করে অনেক কিছু করার বাকি আছে। প্লিজ।'
তাঁর সেই পোস্টের স্ক্রিনশট নিজের পেজ থেকে পোস্ট করে সুস্মিতা লেখেন, ‘এটা দু’জনের সিদ্ধান্ত। আমরা দু'জন দু'জনকে সম্মান করি । দয়া করে আমাদের সিদ্ধান্তকে সম্মান করতে অনুরোধ করছি। এটাই জন্মদিনে আপনাদের কাছে আমার চাওয়া। আশীর্বাদ করুন পরবর্তী অধ্যায়ে আমরা আমাদের মতো করে যেন ভালো থাকতে পারি।'
তবে সুস্মিতার এই পোস্ট সামনে আসার পর থেকেই নানা মন্তব্য করেছেন অনুরাগীরা। একজন লেখেন, ‘শুভ জন্মদিন সুস্মিতা। দুটো খুব ভালো মানুষও একসঙ্গে ভালো নাই থাকতে পারেন। তবুও ভালো থাকাটাই জরুরী। দু’জনে নিজের মতো করে ভালো থেকো আর খুশি থেকো। তোমরা দু'জনেই আমার খুব পছন্দের। তাই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি যেটা সঠিক, যেটা তোমাদের জন্য ভালো, সেটাই যেন তিনি করেন।' আর একজন লেখেন, ‘শুভ জন্মদিন ভালো থাকবেন। আপনাদের ভ্লগ দেখলেও কোনদিনও সেই ভাবে কমেন্ট করিনি। একটা কথা খুব বলতে ইচ্ছা করছে সংসার করা অত সোজা ব্যাপার নয়। হ্যাঁ জানি অনেকেই বলবে, না পোষালে কেন একসঙ্গে থাকবে? তবে জানেন তো অ্যাডজাস্ট ছাড়া সংসার জীবনেও হয় না। দু’পক্ষকেই অ্যাডজাস্ট করতে হয়। ডিভোর্স মোটেই পরবর্তী জীবনে সুখী হওয়ার চাবিকাঠি নয়। আর আপনারা নিজেদের ব্যক্তিগত জীবন এত বেশি দেখিয়ে দিয়েছেন সবার সামনে এখন আপনাদের পার্সোনাল লাইফও পাবলিক হয়ে গিয়েছে। প্রত্যেকেই আমরা সামান্য সময়ের পথিক… যতদিন পৃথিবীতে আছেন সুখে আনন্দে সকলকে আনন্দ দিয়ে বাঁচুন। ভালো থাকবেন।'
আর একজন লেখেন, ‘এমন হবে না তো? জীবনে একদিন অনেক টাকা হবে কিন্তু তুমি কেমন আছো জিজ্ঞেস করার মত মানুষ থাকবে না? আমি জানি না কেন এমন হল? তাহলে সবটাই ক্যামেরার সামনে নাটক ছিল তোমাদের? আসলে ১৭বছরের সংসার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি একটা সংসার গড়ে ওঠে অনেক ত্যাগ আর মানিয়ে নেওয়াতে। ছেড়ে দেওয়া সহজ। যাইহোক তোমাদের জীবন, সিদ্ধান্ত তোমাদের। তবে এটুকু বুঝলাম জীবনে চাওয়া পাওয়ার শেষ নেই আমাদের, আর সেই চাওয়া পাওয়াকে পূর্ণ করতে গিয়ে নিজেদের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্তগুলোকেই আমরা হারিয়ে ফেলি। যাইহোক সুস্মিতা ভালো থেকো, নিজের কাজে সফল হও।জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।’