জাস্টিস হেমা কমিটির রিপোর্টের ফলাফল প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে মালায়ালাম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে মহিলাদের নাকি নানান জঘন্য হেনস্থা-সহ যৌন নিগ্রহের শিকার হতে হয়। এই রিপোর্ট বিরাট ধাক্কা দিয়েছে গোটা কেরলকে৷ ২০১৭-এর ফেব্রুয়ারিতে চলন্ত গাড়িতে একজন বিশিষ্ট অভিনেত্রীর যৌন নিপীড়নের খবর প্রকাশ্যে আসার পর কেরল সরকার ওই বছরই জুলাই মাসে একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল।
কেরল হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কে হেমার সভাপতিত্বে গঠিত এই কমিটিতে প্রবীণ অভিনেতা টি. সারদা এবং অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার কেবি ভালসালাকুমারী অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: UAE-এ মুক্তির আগে 'খেল খেল মে’ থেকে বাদ ফারদিন খানের ঘনিষ্ট দৃশ্য! এই নিয়ে মুখ খুললেন পরিচালক
তিন সদস্যের কমিটি মালায়ালাম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন যে তাঁরা কী পরিমাণ হয়রানির মুখোমুখি হয়েছেন। সেই সব মর্মান্তিক ঘটনার কথা শুনেন তাঁরা। এই তদন্ত চলাকালীন কমিটি জুনিয়র আর্টিস্টদের সঙ্গেও কথা বলে। তাছাড়াও অসংগঠিত কর্মী, পাশাপাশি যে সব শিল্পী বা প্রযুক্তিবিদরা রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। যারা অ্যাসোসিয়েশন অফ মালায়লাম মুভি আর্টিস্টস (AMMA) বা কেরালার ফিল্ম এমপ্লয়িজ ফেডারেশন (FEFKA) এর সদস্য নয় তাঁদের সঙ্গেও কথা বলে কমিটি।
জুনিয়র আর্টিস্ট এবং কোঅর্ডিনেটরদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে যে তাঁদের প্রতিদিন কী পরিমাণ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। সমস্যাগুলির মধ্যে রয়েছে মৌলিক বিষয় যেমন- শৌচালয়ের সুবিধার অভাব, টানা ১৯ ঘন্টা কাজ করার জন্য চাপ দেওয়া। ছাতা ছাড়া প্রচণ্ড রোদে দাঁড়িয়ে থাকা এবং খাবার সরবরাহ না করার মতো অমানবিক নানা পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় তাঁদের।
আরও পড়ুন: 'আমি চলে গেলে আমার জন্য কথা বলুন…' আরজি কর কাণ্ডে মুম্বইয়ে বসে সুর চড়ালেন ফারহান আখতার
তাছাড়াও কমিটি পর্যবেক্ষণ করে জানায় যে, কিছু নির্দিষ্ট সেটে জুনিয়র আর্টিস্টদের সঙ্গে অতন্ত্য অমানবিক আচরণ করা হয়। কিমিটির মতে, 'এটি মর্মান্তিক যে জুনিয়র আর্টিস্টদের সঙ্গে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির নির্দিষ্ট কিছু সেটে ক্রীতদাসের থেকেও খারাপ আচরণ করা হয়ে থাকে। তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক চাহিদাগুলির বিষয়ও সম্পূর্ণ অবহেলিত। এমনকি সেটে তাঁদের টয়লেটের সুবিধাও দেওয়া হয় না। সকাল ৭টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত একটানা ১৯ ঘণ্টা সেটে থাকতে বাধ্য করা হয় একজন জুনিয়র আর্টিস্টকে। সকলকে প্রচণ্ড রোদে দাঁড়াতে বাধ্য করা হয়, প্রয়োজনে ছাতা দেওয়া হয় না। এমনকী কিছু কিছু ক্ষেত্রে খাবারা বা পানীয় জল কিছুই দেওয়া হয় না। আবার অনেক সেটে খাবার দেওয়া হলেও জল দেওয়া হয় না।