'জামতাড়া', ঝাড়খণ্ডের এই শহরের নামের সঙ্গে এখন অনেকেই পরিচিত। নেটদুনিয়ায় এই জামাতাড়া গ্যাং-এর খপ্পরে পড়ে টাকা খুইয়ে বসেছেন বহু জনতা। জামাতাড়া গ্যাং-এর এই সাইবার ক্রাইমের কথা এখন অনেকেই জানেন। আর সেই সব কাণ্ডকারাখানা নিয়েই ওয়েব সিরিজ বানিয়েছিলেন পরিচালক সৌমেন্দ্র পাধি। যেটির প্রযোজনা করেছিলেন মণীশ ত্রেহান। আর এবার এই প্রযোজকের বিরুদ্ধেই উঠল আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ।
ইতিমধ্যেই মণীশ ত্রেহানের বিরুদ্ধে মুম্বই পুলিশে FIR দায়ের করেছেন মুম্বইয়ের খার এলাকার ব্যবসায়ী নিহার এল। বছর ৪০-এর ব্যবসায়ী নিহার এলের অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে মণীশ ত্রেহানের আলাপ হয়েছিল এক বন্ধুর মাধ্যমে। মণীশ এক বিজ্ঞাপন কোম্পানির ডিরেক্টর হিসাবে নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন। ব্যবসায়ী নিহারের দাবি ছিল, মণীশ তাঁকে বলেছিলেন, তিনি নিজের ব্যবসা বাড়াতে চান। একটা সিনেমায় অর্থ বিনিয়োগ করতে চান, পরে সেই ছবি অ্যামাজন প্রাইমে বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন মণীশ। আর এই কথা বলেই মণীশ, নিহারের কাছে ২ কোটি টাকা ধার নিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, ১ বছরের মধ্যে সুদে-আসলে টাকা ফেরত দেবেন।
আরও পড়ুন-প্রেমিকা নয়, হবু শাশুড়ি মা-কে I Love You বলে গান গাইলেন দেব! লজ্জায় লাল রুক্মিণী
এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ, ঘটনার ১ বছর পর মণীশ,সতবন্ত সিং নামে এক ব্যক্তিকে নিয়ে আবারও নিহারের অফিসে যান। সতবন্তকে এক জনপ্রিয় ওয়েব প্ল্যার্টফর্মের এক সিনিয়র কর্মকর্তা হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেন। জানান, সিনেমার শ্যুটিং হয়ে গিয়েছে, শুধু এডিটিং বাকি। তাই আরও ৫০ লক্ষ টাকা লাগবে। ছবি OTT-তে বিক্রি করলে ৬মাসেই টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ী নিহার জানান, তিনি গত বছর অক্টোবরে এই টাকা মণীশের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত করেছিলেন। একটি লিখিত চুক্তি অনুসারে মণীশ লেখেন, তিনি নিহারের থেকে ১, ২৫ কোটি টাকা নিয়েছেন লোন হিসাবে। এমনকী 'জামাতাড়া' প্রযোজক মণীশ ২.৫০ লক্ষ টাকার একটা পোস্ট ডেটেড চেকও দেন নিহারকে। সেই চেক অনুসারে নিহার এলের ৩১ মার্চের মধ্যে সমস্ত টাকা সুদ সহ ফেরত পাওয়ার কথা।
তবে অভিযোগ, মণীশ ত্রেহানের দেওয়া সেই চেক নিহার ব্যাঙ্কে জমা দিলেও তিনি টাকা ফেরত পাননি। কারণ প্রযোজক মণীশ চেকগুলিতে 'স্টপ পেমেন্ট' করে রেখেছিলেন। এরপর নিহার, প্রযোজক মণীশের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন ধরেননি। উল্টে নম্বরও ব্লক করে দেন। আর এরপরই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন মুম্বইয়ের খার এলাকার এই ব্যবসায়ী নিহার এল। ঘটমার বিষয়ে মুম্বইয়ে সান্তাক্রুজ থানায় FIR দায়ের হয়েছে। মণীশ ত্রেহানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ (প্রতারণা), ৪০৬ (ফৌজদারি বিশ্বাস লঙ্ঘন) এবং ৩৪ (অসৎ উদ্দেশ্য) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
এদিকেমণীশ ত্রেহানের আইনজীবী শিবম দেশমুখের দাবি, 'নিহার একটি বন্ধুত্বপূর্ণভাবেই ঋণ নেওয়া হয়েছিল। ২০২৪-এর মার্চে ইতিমধ্যেই তাঁকে ৯০ লক্ষ টাকা (আনুমানিক) ফেরতও দেওয়া হয়েছে।। এরপর 0১ এপ্রিল, (২০২৪) নিহার এবং তাঁর বাবা মণীশ ত্রেহানকে তাঁদের অফিসে ডেকে পাঠান। এবং সেসম তাঁরে ১,৬০,০০,০০০ টাকা দেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয় এখনই নগদ টাকা না দিলে মারাত্মক পরিণতি ভোগ করতে হবে। মণীশ ত্রেহান তাঁদের বেআইনি দাবি পূরণের জন্য ৬ মাসের সময় চেয়ে অনুরোধ করেন। তবে তারপরেও বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মণীশকে আটকে রাখা হয়েছিল। পরের দিন এবং এনসিআর তাদের বিরুদ্ধে সান্তাক্রুজ থানায় নথিভুক্ত করা হয়েছিল। তাঁরাও ঠিক পরের দিনই তাঁদের বিরুদ্ধে সান্তাক্রুজ থানায় FIR দায়ের করেছেন।