
Betvisa
6.88% Weekly Cashback on 2025 IPL Sports
'প্রধান' আসছে। আর এই ছবিতে পুলিশ আধিকারিক দেবের অন্যতম সহকারী সোহম চক্রবর্তী। তারই সুবাদেই দীর্ঘদিন পর রুপোলি পর্দায় ফিরছে দেব-সোহম জুটি। এই মুহূর্তে ছবির প্রচারের কাজ তো রয়েছেই, তারই সঙ্গে রয়েছে 'বিধায়ক' হিসাবে রাজনৈতিক ব্যস্ততা। তার মাঝেও সময় বের করে Hindustan Times Bangla-র সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ আড্ডা দিলেন অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী।
সোহম: হ্য়াঁ, সেটা বলতে পারেন। (হেসে) প্রধানের প্রচার রয়েছে। এছাড়া, পরের ছবির প্রি-প্রোডাকশনের কাজ রয়েছে, বিধায়ক হিসাবে রাজনৈতিক কিছু প্রতিশ্রুতিও রয়েছে। তাই ব্যস্ততা তো আছেই।
সোহম: আমি এখানে একজন ASI। যে সিস্টেমের মধ্যে থাকা দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। যদিও এর পিছনে একটা আবেগ, নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। ছবিতে অনেক ইমোশনাল ঘটনা রয়েছে, সবটা তো এখন বলতে পারব না। এই গল্পে অনেক চড়াই উৎরাই রয়েছে। এখানে আমি পরিবারের একজন দায়িত্ববান সদস্য, আবার পুলিশের দায়িত্বও পালন করেছি।
সোহম: হ্যাঁ, নৈতিকতার দিক থেকে কিছু মিল তো রয়েছেই। ছবিতে বেশ কিছু ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে, যেগুলো ভীষণভাবেই বাস্তবিক। ছবির ক্ষেত্রে যেমন পুলিশের উর্দি পরে কাজ করেছি, আর বাস্তবে প্রশাসনিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে দায়িত্ব নিতে হয়। তবে টার্গেট সেই একই, যে মানুষগুলো বিপদে রয়েছে, তাঁদের পাশে থাকা। এখানে হয়তো কোনও উর্দি নেই, তবে সেই ইউনিফর্মের সাহায্য নিয়েই অনেক ক্ষেত্রে কাজ করতে হয়।
সোহম: অভিজিৎদার সঙ্গে এটা আমার প্রথম কাজ। তবে উনি ভীষণ সাপোর্ট করেছেন। নন ফিকশনের ক্ষেত্রে ওঁর (অভিজিৎ সেন) সঙ্গে কিছু কাজ করেছি, তবে ছবি করিনি কখনও। এই ছবির ক্ষেত্রে যখনই কোথাও আমার মনে হয়েছে, এই চরিত্রটা কি এই কাজটা করতে পারে! আমি সেটা বলেছি, অভিজিৎদা আমায় সমর্থন করেছেন। আবার হয়তো উনিও কোনও পরামর্শ দিয়েছেন, আমি শুনেছি। আর তাই অভিনয়টা ন্যাচারাল হয়েছে।
সোহম: সেটা তো আমি প্রথম দিন থেকেই জানতাম, যে এখানে আমার স্পেশাল অ্যাপিয়ারেন্স। তার মধ্যেও এই চরিত্রটার বিশেষ গুরুত্ব আছে। তবে এই চরিত্রে আমাকে নেওয়ার বিষয়ে প্রধান উদ্যোগটা ছিল প্রযোজক অতনু রায়চৌধুরীর। উনি ধরেই নিয়েছিলেন এটা আমি করছি। তারপর পরিচালক অভিজিৎ সেন, দেব, সকলেই আমায় বলল, যে 'ভাই তুই এই চরিত্রটা কর'। তবে তার পরেও কিছু প্রশ্ন আমার ছিল।যখন ফ্লোরে গেলাম দেখলাম, যেটা আমায় বলা হয়েছিল চরিত্রটা তার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমি খুশি।
বন্ধু দেবের সঙ্গে সোহম
সোহম: আসলে ইন্ডাস্ট্রিতে কী হয়, সম্পর্কগুলো ভীষণ ফরম্য়াল, আমি এটা বলতে পারি যে দেবের সঙ্গে আমার সম্পর্কে কোনও ফরম্য়ালিটি নেই। একদম আমার ছোটবেলার বন্ধুদের সঙ্গে যেভাবে কথা বলি, যেমন আলোচনা হয়, তেমনই দেব আমার বন্ধু। এখানে কোনও সীমাবদ্ধতা নেই। শুধু অনুষ্ঠানে দেখা হয় এমন নয়, ও আমার বাড়িতে আসে, আড্ডা হয়। ও কখনও আমার কোনও ভুল ত্রুটি ধরতেও দ্বিধা করে না, যেটা ভুল ও আমায় বলতে পারে। এমনই বন্ধু আমরা। (হাসি)
সোহম: আসলে কার্বোহাইড্রেট বন্ধ রেখেছি। মাঝে যেমন ফুলে গিয়েছিলাম, সেটা কমেছে। এক্সারসাইজ রেগুলার হয়ে ওঠে না। তবে সপ্তাহে ৩-৪দিন করার চেষ্টা করি। তবে চেষ্টা করব, যাতে ডায়েটে আরও মনোযোগ দিতে পারি।
সোহম: হ্যাঁ, সেটা ঠিকই। তবে এখন কনটেন্ট অনেক বদলে গিয়েছে। আগের মতো 'প্রেম আমার', ‘বোঝে না সে বোঝে না’, ‘অমানুষ’, ‘পাগলু’র মতো কনটেন্ট হচ্ছে কই! যেখানে লার্জার দ্যান লাইফ চরিত্র রয়েছে। যেখানে আমাদের হিরো বানানো হয়েছে। ওই ছবিতে সুপার স্টারডম থাকত। আমরা ফাইটের লাইসেন্স পেতাম, ১২-১৫দিন ফাইট করতাম। কথায় কথায় ইউরোপ যেতাম, ব্যঙ্কক তো পাশের বাড়ি ছিল। এখন সে ধরনের বাণিজ্যিক ছবি কোথায় হচ্ছে? তবে হ্য়াঁ, মাঝে কিছু এমনি ছবি করে ফেলেছি। আবার রাজনৈতিক দায়িত্বও এসে গিয়েছিল, সব মিলিয়ে কেরিয়ার একটু ঘেঁটেছে বটেই। তবে সব অভিনেতাদের ক্ষেত্রেই চড়াই উৎরাই থাকে, আমারও হয়েছে। পরে অনুভব করেছি, টাকার জন্য ছবি করলে নিজের স্টারডম পড়ে যাবে, পরে কাজ পাব না। তাই এখন ভেবেচিন্তে কাজ করছি।
সোহম: (সজোরে হাসি) আমিও আপনার সঙ্গে একমত। আসলে এটা ঘটেছে শুধুমাত্র কলকাতার দর্শকদের কাছে। কারোর নাম নিতে চাই না, আসলে যাঁরা একটু অন্য ধরনের ছবি বানান, তাঁরা মনে করেন, তাঁরাই শুধু শিক্ষিত পরিচালক। অঞ্জন চৌধুরী, রাজ চক্রবর্তী, রবি কিনাগী, রাজা চন্দের মতো পরিচালকরা যাঁরা আমাদের জন্ম দিয়েছেন আমাদের তারকা বানিয়েছেন, তাঁরা কিন্তু এখনও এই বাণিজ্যিক ছবির ঘরানাকে টিকিয়ে রেখেছেন। কিছু বাঙালি এটা বলতে ভালো বাসেন, 'নাহ আমি বাংলা ছবি দেখি না'। তবে ওরাই আমাদের দেখলে নিজের বাচ্চাদের নিয়ে এসে বলেন, ‘আমার বাচ্চাটা না আপনার সঙ্গে সেলফি তুলতে চায়’, বলে নিজেও বাচ্চার সঙ্গে সেলফি তুলে গেলেন! আমার প্রশ্ন এটা কেন! লজ্জা কীসের? এটা তো আমাদেরও ভালো লাগা। কেউ চাকরি করেন, কেউ ব্যবসা করেন, আর আমরা ছবি করি। কাউকে ছোট করে বড় হওয়া যায় না।
সোহম: হ্যাঁ, দোষ আমাদেরও আছে। আমাদেরকে যে ধরনের ছবি স্টার বানিয়েছে, সেই ছবি আমরাও বানাচ্ছি না। দেব তো আর 'পাগলু' বানাচ্ছে না, জিৎদাও ‘সাথী’, আমি ‘প্রেম আমার’-এর মতো ছবি বানাচ্ছি না। বুম্বাদাও ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’-এর মতো ছবি করছেন না। তাই এটা আমাদেরও দোষ। সেফ প্রযোজনা করছি, যে অত বাজেট বাড়াব না, কমের মধ্যে দেখি। গ্রামের যে দর্শক রয়েছে, তাঁদেরকে এক্ষেত্রে আমরাও বঞ্চিত করছি। তবে এটায় বদল আসা উচিত। এদিকে আমাদের এই শহুরে দর্শকরাই তো পুষ্পা, KGF দেখতে যাচ্ছেন। তবে আমরা এধরনের ছবি করলে আবার এ শহরের দর্শক কিন্তু দেখবেন না।
সোহম: এদের সঙ্গে আমার বহু পুরনো সম্পর্ক। সেই ৫ বছর বয়সে ‘মম আন্টি’ (মমতা শঙ্কর) আমার মা হয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়ের 'শাখা প্রশাখা' ছবিতে, সেটা ১৯৯০ সাল। তারপর আবার এখন কাজ করলাম। পরাণ জ্যেঠুর সঙ্গে কাজ করেছি বহু ছোটবেলায়,নীরজ শর্মার 'ভোর' বলে একটা ছবিতে। সেই ছবিতে বসন্ত চৌধুরীও ছিলেন। যে মানুষগুলোর কোলে উঠেছি, এই মানুষগুলো তো কিংবদন্তি, আজও তাঁদের সঙ্গে কাজ করছি, এটা আমার প্রাপ্তি। আমি ধন্য যে ওঁদের সংস্পর্শে থেকেছি। ওঁরা বয়সে অনেক বড়, তবে এখন ওঁরাই কিন্তু আবার বন্ধুর মতো। পরাণ জ্যেঠু থাকলে ফ্লোরে খুব মজা হয়। আর মম আন্টি খুব নমনীয়। এছাড়াও কাঞ্চনদা, খরাজদা, অম্বরীশ, অনেকেই রয়েছেন। উত্তরবঙ্গে শ্যুটিংয়ের পর রোজ আড্ডা হত। রোজই কারওর না কারওর ঘরে আড্ডা চলত। খরাজদা একদিন মাংস রান্না করল। আমরা সবাই মিলে গান গাইলাম। নীলদাও ছিল। খুব সুন্দর বাড়ির মতো আবহ তৈরি হয়েছিল।
পরিবারের সঙ্গে সোহম
সোহম: যদি সত্যি কথা বলি, তাহলে বলব সেভাবে সময় দিতে পারি না। তবে যতটুকু পারি চেষ্টা করি। বিশেষ করে আমার বাচ্চাদের জন্য। হয়ত ওরা কোথাও বেরোতে চায়। বিশেষ করে ছোটটা কখনও বলে, ‘পাপা আজ তুমি বেরোবে না।’ তখন খুব খারাপ লাগে বাড়ি থেকে বের হতে। আবার হয়ত বোঝালাম, বলতো পাপা, আমি যদি কাজ না করি, তাহলে কীভাবে মার্সিডিজ কিনে দেবো? বড় ছেলে তখন বলল, ‘আমার ওসব চাই না, তুমি শুধু আমাদের সঙ্গে থাকো।’ এটা সত্য়িই খারাপ লাগে। তবে যতটুকু পারি দেওয়ার চেষ্টা করি।
সোহম: দেখুন, সেটা দলের উপর নির্ভর করছে। আমাদের দিদি মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর নির্ভর করছে। উনি যদি যোগ্য মনে করেন, যদি ভাবেন আমি উপযুক্ত কর্মী, তাহলে হয়ত হবে। এটা সম্পূর্ণ ওঁদের উপর নির্ভর করছে।
সোহম: (হেসে ফেলে) সে তো আছেই। গুণ-দোষ। সবটা বলতে পারব না। তবে আমি একটু রগচটা আছি। মাথা গরম করে ফেলি, মারামারি করে ফেলি। যাঁরা খুব কাছের, তাঁরা জানেন। তবে এখন নিজেকে ঠিক রাখার চেষ্টা করি। কারণ, এখন রাজনীতি করি, তাই সচেতন থাকতে হয়।
সোহম: আরে সেদিন তো একজনকে বললাম, না রে বিয়ে করিস না। এটা আসলে নির্ভর করে, কেমন সঙ্গী পাচ্ছেন। কারণ, গোটা জীবনটা কাটানো। সঙ্গী নিজের মতো হলে কোনও সমস্যা নেই, আর না হলেই সমস্যা। তবে হ্যাঁ, আমি তনয়ার মতো একজন স্ত্রী পেয়েছি। যাঁর সঙ্গে আমি যখন সোহম হইনি, তখন থেকে সম্পর্ক। সেই তখন থেকে ও আমায় বিশ্বাস করে। আর বিয়ের পরও ১০ বছর হয়ে গেল। আমি এখনও বেঁচে আছি (মজা করে)। একটু সিরিয়াস হয়ে, হ্য়াঁ, তবে আমি সুখী।
আর দেব তো বিয়ে না করেও বিবাহিত। বেচারা আরও কষ্টে আছে (মজা করে)। ও বলে, ভাই তুই বিয়ে করে পরাধীন, আর আমি না করে। আমি বললাম, যখন পরাধীন, তাহলে বিয়ে করে লাইসেন্সটা নিয়েই নে। (হাসি)
6.88% Weekly Cashback on 2025 IPL Sports