আইপিএল ২০২৫-এ, লখনউ সুপার জায়ান্টসের তরুণ স্পিনার দিগ্বেশ রাঠি তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। কিন্তু মাঠে তিনি যতটা সেরা ছিলেন, তাঁর উদযাপনের ধরণ এবং বিতর্ক নিয়েও অনেক আলোচনা হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে।
দিগ্বেশ ‘নোটবুক সেলিব্রেশন’ করে বেশ কয়েক বার সতর্কবার্তা পেয়েছেন। এমন কী তাঁকে এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধও করা হয়েছিল। এবার এই পুরো বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রাক্তন ওপেনার বীরেন্দ্র সেহওয়াগ। তিনি দিগ্বেশের হয়ে ব্যাট ধরেছেন।
‘ছেলেটি প্রথম বার খেলছে, তাকে বাঁচানো যেত’
দিগ্বেশকে এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করার পর, বীরেন্দ্র সেহওয়াগ তাঁর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘নিষেধাজ্ঞাটি একটু বেশিই কঠোর ছিল। আইপিএলে এটি তাঁর প্রথম মরশুম।’
তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘এমএস ধোনিও মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন, কিন্তু তিনি কোনও নিষেধাজ্ঞা পাননি। বিরাট কোহলি অনেক বার আম্পায়ারদের সঙ্গে জোরে কথা বলেছেন, কিন্তু তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। দিগ্বেশকেও ক্ষমা করা যেত।’
সেহওয়াগের এই বক্তব্যের পর, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক শুরু হয়েছে যে, বড় নামগুলি ছাড় পেলেও, তরুণ খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে কী নিয়মগুলি আরও কঠোর ভাবে প্রয়োগ করা হবে?
‘ক্রিকেটের স্পিরিট’ নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠছে
আরও একটি সাম্প্রতিক ঘটনায়, দিগ্বেশ খবরে আসেন, যখন তিনি নন-স্ট্রাইকার এন্ডে জিতেশ শর্মাকে রান আউট করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে এলএসজি অধিনায়ক ঋষভ পন্ত পরে সেই আবেদন প্রত্যাহার করে নেন। অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে ‘ক্রিকেটের স্পিরিট’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু প্রবীণ ভাষ্যকার হর্ষ ভোগলে এই বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
তিনি টুইট করেছেন, ‘যদি আম্পায়ার মনে করেন যে, ব্যাটসম্যান ক্রিজের ভেতরে আছেন, তাহলে নট আউট দেওয়া ঠিক। কিন্তু বারবার ক্রিকেটের স্পিরিট নিয়ে কথা বলা ভুল। খেলাটি নিয়ম অনুসারে খেলতে দিন।’
তরুণ খেলোয়াড়রা কি সহজ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন?
দিগ্বেশ রাঠির এই আচরণ থেকেই স্পষ্ট যে, আবেগ এবং আগ্রাসন বর্তমান তরুণ ক্রিকেটারদের বৈশিষ্ট্য। তবে এই আগ্রাসন বড় প্লেয়াররা দেখালে, তাঁরা ছাড় পাচ্ছে, অথচ তরুণরা কেন শাস্তি পাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বড় নামের ক্ষেত্রে কেন নিয়ম শিথিল করা হচ্ছে, এদিকে তরুণ খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে চলছে তীব্র বিতর্ক। বীরেন্দ্র সেহওয়াগের মন্তব্য এই বিতর্কে যেন ঘি সংযোগ করেছে। এই বিতর্কে বিসিসিআই বা আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিল কী অবস্থান নেয়, তা দেখার বিষয়!
দিগ্বেশকে কখন জরিমানা করা হয়েছিল?
১. প্রথম পেনাল্টি (১ এপ্রিল, ২০২৫, পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে)
ব্যাটসম্যান প্রিয়াংশ আর্যকে আউট করার পর রাঠি ‘নোটবুক সেলিব্রেশন’ করেন, যার ফলে তাঁকে তাঁর ম্যাচ ফির ২৫% জরিমানা এবং একটি ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হয়।
২. দ্বিতীয় পেনাল্টি (৪ এপ্রিল, ২০২৫, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে)
নমন ধীরকে আউট করার পর একই উদযাপনের পুনরাবৃত্তি করার জন্য তাঁকে তাঁর ম্যাচ ফির ৫০% জরিমানা করা হয়েছিল এবং দু'টি ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হয়েছিল।
৩. তৃতীয় জরিমানা এবং সাসপেনশন (১৯ মে, ২০২৫, সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে)
অভিষেক শর্মাকে আউট করার পর ‘নোটবুক সেলিব্রেশন’ করার জন্য দিগ্বেশ রাঠিকে তাঁর ম্যাচ ফির ৫০% জরিমানা করা হয় এবং দু'টি অতিরিক্ত ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হয়, যার ফলে তাXর মোট ডিমেরিট পয়েন্ট ৫-এ পৌঁছে যায়। ফলস্বরূপ তাঁকে এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।