চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা একাদশে জায়গা হল না ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মার। তবে পাঁচজন ভারতীয় খেলোয়াড়কে সেরা একাদশে রাখল আইসিসি। ভারতের পুরো মিডল অর্ডারকেই টুর্নামেন্টের সেরা একাদশে রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে ওই তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন মহম্মদ শামি এবং বরুণ চক্রবর্তী। আর দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে আছেন অক্ষর প্যাটেল। তাছাড়াও সেরা একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন রাচিন রবীন্দ্র-সহ নিউজিল্যান্ডের চারজন খেলোয়াড়। বাকি দু'জন হলেন আফগানিস্তানের খেলোয়াড়। সেমিফাইনালে উঠলেও অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার কোনও ক্রিকেটারই সেই তালিকায় জায়গা করতে পারেননি। ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের তো কোনও খেলোয়াড়েরই এমন কোনও পারফরম্যান্স ছিল না যে তাঁরা টুর্নামেন্টের সেরা একাদশের ধারেকাছেও আসতে পারবেন। স্বভাবতই সেটা হয়নি।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা একাদশ
রাচিন রবীন্দ্র (নিউজিল্যান্ড), ইব্রাহিম জাদরান (আফগানিস্তান), বিরাট কোহলি (ভারত), শ্রেয়স আইয়ার (ভারত), কেএল রাহুল (ভারত), গ্লেন ফিলিপস (নিউজিল্যান্ড), আজমাতুল্লাহ ওমরজাই (আফগানিস্তান), মিচেল স্যান্টনার (অধিনায়ক, নিউজিল্যান্ড), মহম্মদ শামি (ভারত), ম্যাট হেনরি (নিউজিল্যান্ড) এবং বরুণ চক্রবর্তী (ভারত)।
সেরা একাদশে কোন কোন ব্যাটাররা আছেন?
১) আর রাচিন যে সেই তালিকায় থাকবেন, তা নিয়ে কোনও ধন্দ ছিল। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন। চারটি ম্যাচে মোট ২৬৩ রান করেছেন। গড় ৬৫.৭৫।
২) অপর ওপেনার জাদরান করেছেন ২১৬ রান। আফগানিস্তানের তারকার গড় ছিল ৭২। তার মধ্যে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৭৭ রানের একটা ইনিংস আছে। যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
৩) তিনে আছেন বিরাট। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শতরান এবং সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৮৪ রান মিলিয়ে মোট ২১৮ রান করেছেন। গড় ৫৪.৫।
৪) চার নম্বরে আছেন শ্রেয়স। যিনি আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন। করেছেন ২৪৩ রান। প্রতিটি ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ রান করেছেন। তাঁর সর্বনিম্ন রান হল ৪৫।
৫) পাঁচে আছেন রাহুল। যিনি মাত্র ১৪০ রান করেছেন। সর্বোচ্চ স্কোর মাত্র অপরাজিত ৪২ রান। টিম ইন্ডিয়ার হয়ে ছয়ে নেমে একাধিক ছোট এবং গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন। সেমিফাইনালে তো জয়সূচক শট মারেন। আর ফাইনালে যখন চাপ বাড়ছিল, তখন শেষপর্যন্ত মাঠে থেকে ভারতের জয় নিশ্চিত করেন। ভারতীয় দলের হয়ে ছয় নম্বরে ব্যাট করলেও তাঁকে সেরা একাদশের নম্বরে পাঁচে রাখা হয়েছে।
কোন কোন অলরাউন্ডার আছেন সেরা একাদশে?
৬) ছয় নম্বরে আছেন ফিলিপস। এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এমন সব ক্যাচ নিয়েছেন যে তাঁকে শুধুমাত্র সেই কারণেই সেরা একাদশে রেখে দেওয়া যায়। রবিবার ফাইনালে ভারত যে চাপে পড়ে গিয়েছিল, সেটার নেপথ্যে কিউয়ি তারকার অবিশ্বাস্য ক্যাচ আছে। তাছাড়া ফিনিশারের ভূমিকা পালন করেছেন। করেছেন ১৭৭ রান।
৭) সাতে রাখা হয়েছে ওমরজাইকে। তিনি মোট ১২৬ রান করেন। সাতটি উইকেট নিয়েছেন। একটি ম্যাচেই পাঁচ উইকেট নেন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫৮ রানে যে পাঁচ উইকেট নেন, তা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল।
৮) স্যান্টনারকে অধিনায়ক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। যিনি দুর্ধর্ষ অধিনায়কত্বের পাশাপাশি দারুণ বোলিং করেছেন। কিউয়িরা যে দুর্দান্ত খেলেছেন, সেটার নেপথ্যে স্যান্টনারের বোলিংয়ের বড় ভূমিকা আছে। মোট নয় উইকেট নিয়েছেন। গড় ছিল ২৬.৬। ইকোনমি রেট হল ৪.৮।
বোলারদের মধ্যে কারা কারা আছেন?
৯) চোটের জন্য দীর্ঘদিন বাইরে থাকার পরে সদ্য মাঠে ফেরেন। তারপরই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নয় উইকেট নিয়েছেন। গড় হল ২৫.৮। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই পাঁচ উইকেট নেন। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিনটি উইকেট নেন শামি।
১০) চোটের জন্য ফাইনালে খেলতে না পারলেও বাকি টুর্নামেন্টে দুর্ধর্ষ বোলিং করেন হেনরি। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক হয়েছেন। নেন ১০টি উইকেট। ইকোনমি রেট ১৬.৭। ভারতের অন্যতম ত্রাস হলেন হেনরি। ফাইনালে তিনি যে খেলেননি, সেটা বড় ফারাক গড়ে দিয়েছে।
১১) আর সেরা একাদশের সর্বশেষ সদস্য হলেন বরুণ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম দুটি ম্যাচে না খেলার পরেও নয় উইকেট নিয়েছেন। গড় হল ১৫.১। ইকোনমি রেট ৪.৫৩। তিনি এসে ভারতের রূপ পালটে দেন।
১২) দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে আছেন অক্ষর। ভারতীয় দলের অন্যতম কার্যকরী খেলোয়াড় হলেন অক্ষর। পাঁচটি উইকেট নেন। ইকোনমি রেট মাত্র ৪.৩৫। সেইসঙ্গে ব্যাট হাতে অত্যন্ত ইনিংস খেলেছেন। খুব বেশি রান না করলেও কার্যকরী ইনিংস খেলেন।