2 মিনিটে পড়ুন Updated: 14 May 2025, 07:44 AM ISTSanjib Halder
তেম্বা বাভুমা বলেন, ‘যদি সত্যিই ওর কোনও আসক্তি থাকে, তাহলে ওর সাহায্য প্রয়োজন। আর যদি সেটা শুধু একবারের ভুল হয়, তাহলে ওকে নিজের কৃতকর্মের ফল ভোগ করতে হবে—মিডিয়া, স্লেজিং, সমালোচনা সবকিছু মোকাবেলা করতে হবে।’
কাগিসো রাবাদাকে নিয়ে আশায় দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড (ছবি- REUTERS)
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (WTC) ফাইনাল ঘনিয়ে আসছে, আর সেই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে দক্ষিণ আফ্রিকা আশাবাদী যে কাগিসো রাবাদা তার সদ্যসমাপ্ত এক মাসের নিষেধাজ্ঞার ছায়া কাটিয়ে উঠে পুরোপুরি ফোকাস করতে পারবেন মাঠের পারফরম্যান্সে।
CSA-এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুরো ঘটনার সময় তারা মানবিক দৃষ্টিকোণেই রাবাদার পাশে ছিলেন। সতীর্থ এবং কোচিং স্টাফের কাছ থেকেও রাবাদা পেয়েছেন মানসিক সমর্থন। অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা এবং প্রধান কোচ শুকরি কনরাড—উভয়েই প্রকাশ্যে বলেছেন, এখন রাবাদার পাশে দাঁড়ানোই সবচেয়ে জরুরি এবং তার মনোযোগ মাঠের খেলায় ফেরানোই সবচেয়ে বড় লক্ষ্য।
এই ঘটনার পর দক্ষিণ আফ্রিকা দলের জন্য WTC 2023-25 Final ম্যাচটি শুধু একটি ক্রিকেট ম্যাচ নয়, বরং একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে মানসিকভাবে পুনরুজ্জীবিত করে তোলার একটি সুযোগও। এখন নজর লর্ডসের দিকে—যেখানে রাবাদা যদি নিজের পুরনো ছন্দে ফিরতে পারেন, তবে দক্ষিণ আফ্রিকা অবশ্যই ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বড় লড়াই দিতে পারবে।
শুক্রবার ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা (CSA) নিশ্চিত করে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে টেস্ট দলের দায়িত্বে থাকা শুকরি কনরাড এখন সাদা বলের দলেরও দায়িত্ব নিচ্ছেন—অর্থাৎ তিনি হচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন অল-ফরম্যাট কোচ। বিভিন্ন টি২০ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের কারণে প্রাধান্যপ্রাপ্ত খেলোয়াড়রা দ্বিপাক্ষিক সিরিজে অনুপস্থিত থাকেন, ফলে দল দুর্বল হয়—এই প্রবণতাকে বন্ধ করতে চান কনরাড। তবে তার দর্শনের প্রথম পরীক্ষা হবে সাদা পোশাকে।
আইপিএলের ফাইনাল ২৫ মে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, ক্রিকেটের বাইরের কারণে সেটি পিছিয়ে ৩ জুন করা হয়েছে। CSA আশা করছিল ২৬ মে’র মধ্যে আইপিএলে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকান খেলোয়াড়রা ফিরে আসবে। এবং এখনও সেই পরিকল্পনায় তারা অটল। কারণ, ১১ জুন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (WTC) ফাইনাল রয়েছে, তার আগে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তুতি ম্যাচও আছে।
CSA-এর হাই পারফরম্যান্স ও জাতীয় দল পরিচালক এনোক এনকওয়ে জোহানেসবার্গে এক সংবাদ সম্মেলনে (১৩ মে) বলেন, ‘একটি বিষয় আমরা পরিষ্কার করে দিয়েছি, এবং আমরা এটা IPL ও BCCI-এর সঙ্গে চূড়ান্ত করছি—WTC ফাইনালের প্রস্তুতি অনুযায়ী আমাদের আগের পরিকল্পনায় কোনও পরিবর্তন করা হবে না। ২৬ মে’র মধ্যেই আমাদের টেস্ট খেলোয়াড়দের ফিরে আসতে হবে। ওটাই সর্বশেষ সময়সীমা। কারণ আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হচ্ছে WTC ফাইনাল। আমরা আইপিএলের সঙ্গে শেষ ক’দিনে একাধিকবার আলোচনা করেছি যাতে সকলেই একই পথে থাকে।’
এই সাংবাদিক সম্মেলনের বড় অংশজুড়েই ছিলেন কাগিসো রাবাদা। জানুয়ারিতে একটি নিষিদ্ধ ড্রাগ সেবন করেন পরে তিনি পজিটিভ ধরা পড়েন। এপ্রিল ৩ তারিখে তিনি IPL থেকে দেশে ফেরেন এবং এক মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আবার ভারতে ফিরে যান।
এনোক এনকওয়ে বলেন, ‘আমরা ক্রিকেটের দিকটা বাদ দিয়ে আগে মানুষ রাবাদাকে নিয়ে ভাবি। ওর পাশে দাঁড়ানো, নিয়মিত খোঁজ নেওয়া—এইগুলো ছিল প্রাধান্য। ও ক্ষমা চেয়েছে, আমরা সেটা বুঝেছি, গ্রহণ করেছি। এখন আমরা সামনের দিকে তাকাতে চাই।’ এনোক এনকওয়ে আরও বলেন, ‘এই ঘটনার থেকে আমরা শিক্ষা নিয়েছি। যেমনটা ম্যাচ ফিক্সিং ইস্যুতেও নিয়েছিলাম। খেলোয়াড়দের মানসিক স্বাস্থ্য কীভাবে অগ্রাধিকার দেওয়া যায়, সেটা ভাবছি। এটা শুধু KG না, অন্যদের জন্যও শিক্ষণীয়। আমরা খুশি যে এক মাসের নিষেধাজ্ঞার পর বিষয়টা শেষ হয়েছে।’
তেম্বা বাভুমা বলেন, ‘যদি সত্যিই ওর কোনও আসক্তি থাকে, তাহলে ওর সাহায্য প্রয়োজন। আর যদি সেটা শুধু একবারের ভুল হয়, তাহলে ওকে নিজের কৃতকর্মের ফল ভোগ করতে হবে—মিডিয়া, স্লেজিং, সমালোচনা সবকিছু মোকাবেলা করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার জন্য KG প্রথমে একজন বন্ধু। আমি হয়তো এক বছরের মধ্যে আর অধিনায়ক থাকবো না, কিন্তু বন্ধু রয়ে যাবো।’
কনরাডের মন্তব্য ছিল আরও উষ্ণ, ‘আমি এক মুহূর্তের জন্যও ভাবিনি যে KG খেলতে পারবে না। আমার দুশ্চিন্তা ছিল সে মানুষ হিসেবে কেমন আছে, খেলোয়াড় হিসেবে না। সে তার শাস্তি পেয়েছে, এখন আমি চাই সে মাঠে পারফরম্যান্স করুক।’